নরেন্দ্র মোদী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
উঠে গেল দেশব্যাপী রেশন ধর্মঘট। ১ জানুয়ারি থেকে রেশন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন রেশন ডিলারদের একাংশ। মূলত অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের তরফে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই ধর্মঘট তোলা হয়েছে। তবে নিজেদের প্রতিবাদের পথ থেকে এখনই সরতে নারাজ তারা। চলতি মাসের ১৬ জানুয়ারি দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে রেশন ডিলার সংগঠনের তরফ থেকে। ওই দিনই বিক্ষোভ সমাবেশের পর সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সেখানেই তাঁকে দেশব্যাপী রেশন ডিলারদের দাবিদাওয়ার কথা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেও যদি সুরাহা না হয়, সে ক্ষেত্রে আবারও আন্দোলনের পথে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সংগঠনটি। রেশন ডিলার সংগঠনের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে দেশের ৮ লক্ষ ৩৮ হাজার রেশন দোকান বন্ধ ছিল।
শনিবার থেকে পশ্চিমবঙ্গেও রেশন ধর্মঘট উঠে গিয়েছে। তবে তার আগে খাদ্য ভবনে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের সঙ্গে রেশন ডিলার সংগঠনের নেতাদের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে ৫ দফার একটি দাবিপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে খাদ্যমন্ত্রীর হাতে। খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, বৈঠকে মন্ত্রী রাজ্যের রেশন ডিলারদের মাসিক অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা কমিশন বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন। খাদ্য দফতরের তরফে সম্প্রতি ‘পিডিএস কন্ট্রোল অর্ডার’ জারি করে রেশন ডিলারদের উপর জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। সেই জরিমানার শর্ত তুলে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। এছাড়াও রেশন ডিলারদের তরফে রথীনকে জানানো হয়, নতুন ইলেকট্রনিক কাঁটায় রেশন বিতরণ করতে গেলে অনেক বেশি সময় লাগছে যার ফলে সাধারণ মানুষের রেশন পেতে অসুবিধা হচ্ছে। তাই ইলেকট্রনিক কাঁটা স্থগিত রাখার আবেদন জানানো হলে, মন্ত্রী সার্ভে রিপোর্ট খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
ই-পস মেশিনে স্টকের ক্ষেত্রে যে গোলমাল রয়েছে। সেই গোলমালের বিস্তারিত রিপোর্ট বৈঠকের পর দফতরের আধিকারিকদের কাছে চেয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে দার্জিলিং জেলার পার্বত্য এলাকায় সরকারি প্রকল্প দুয়ারে রেশন দিতে গেলেও ডিলাররা অতিরিক্ত কমিশন পাচ্ছিলেন না। সেই বিষয়টিও রেশন ডিলার সংগঠনকে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। রেশন ডিলারদের আশা, আপাতত রেশন ডিলারদের এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করলে রেশন ডিলারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক ঠিক থাকবে। সাধারণ মানুষও রেশন পাবেন সহজেই। আপাতত খাদ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের দিকে তাকিয়ে নিজেদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রেশন ডিলাররা।