বাঁ দিকে শ্রীরামপুরের মাহেশের রথ, ডান দিকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রথ। — নিজস্ব চিত্র।
মহা ধুমধামে রথযাত্রা উৎসব পালিত হল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলায় চাকা গড়াল সোজারথের। রথের মেলায় প্রতিটা জায়গাতেই দেখা গেল বহু মানুষের ভিড়।
দেশের অন্যতম প্রাচীন রথযাত্রা হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশে। এ বছর মাহেশের রথযাত্রা পড়ল ৬২৭ তম বছরে। মার্টিন বার্ন কোম্পানির তৈরি লোহার রথের বয়স ১৩৭ বছর। তার আগে ছিল কাঠের তৈরি রথ। ন’টি চূড়া বিশিষ্ট এই রথ ৫০ ফুট উচ্চতার। রয়েছে ১২টি চাকা। হুগলির চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারেও পালিত হয় রথযাত্রা। চন্দননগর লক্ষীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী যদুবেন্দ্র ঘোষ ১৭৭৬ সালে এই রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন। হুগলির বলাগড় থানার গুপ্তিপাড়াতেও পালিত হয় রথযাত্রা। ১৭৪০ সালে এই রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছিল। এ বার ২৮৪ বছরে পড়ল গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা। এই রথযাত্রার বিশেষ আকর্ষণ ভান্ডার লুট।
বাঁকুড়ায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন মল্লরাজের রথের রশিতেও টান পড়ল মঙ্গলবার। কথিত আছে ১৬৬৫ সালে তৎকালীন মল্লরাজা বীরমল্ল রানি শিরোমণির ইচ্ছাপূরণে বিষ্ণুপুর শহরের মাধবগঞ্জে প্রতিষ্ঠা করেন মন্দির। এই মন্দির প্রতিষ্ঠার অল্প দিনের মধ্যেই মন্দিরের আদলে পিতলের রথ নির্মাণ করেন। পিতলের রথ রয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জেও। সেই রথযাত্রা এ বার ১০০তম বছরে পড়ল। বারুইপুরের রায়চৌধুরী বাড়ির রথযাত্রার ঐতিহ্যও বেশ প্রাচীন। সেখানেও পালিত হল রথযাত্রা।
রথযাত্রা মানেই চোখে ভাসে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি। কিন্তু তারাপীঠের রথযাত্রা একেবারে ব্যতিক্রম। এখানকার রথে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার পরিবর্তে রয়েছে তারার মূর্তি। প্রাচীন রীতি অনুযায়ী মঙ্গলবার তারাপীঠে পালিত হল রথযাত্রা।