কাঠের রথে রং করার কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
তিন বছরের মাথায় আবারও পুরনো ছন্দে কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী মদনমোহনের রথযাত্রা। যন্ত্রচালিত ট্রাকে নয়, চিরাচরিত কাঠের রথে চেপেই চলতি বছর মাসির বাড়ি যাবেন মদনমোহন। এমনই জানিয়েছেন কোচবিহারের গুঞ্জবাড়ি ডাঙ্গরাই মন্দির কর্তৃপক্ষ। তিথি অনুযায়ী, আগামী শুক্রবার রথযাত্রা। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ঘিরে সাজ সাজ রব মন্দিরে।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বৈরাগী দিঘি সংলগ্ন মদনমোহন মন্দির থেকে গুঞ্জবাড়ি ডাঙ্গরাই মন্দির পর্যন্ত রথযাত্রা হয়। রথের দড়ি টেনে স্থানীয়েরা মদনমোহনকে তাঁর মাসির বাড়িতে নিয়ে যান। সাত দিন সেখানে থাকার পর আবার নিজের মন্দিরে ফিরে আসেন মদনমোহন। দেবোত্তর ট্রাস্টের বড়বাবু নামে পরিচিত জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনার জন্য গত দু’বছর কাঠের পুরনো রথে করে রথযাত্রা হয়নি। সে জন্য প্রতীকী রথ তৈরি করে আমরা রথযাত্রা উদ্যাপন করেছিলাম। এ বছর পুরনো ছন্দেই রথযাত্রা আয়োজন করছি আমরা। কাঠের রথ সংস্কার করে রং করানো হচ্ছে। পাশাপাশি, রথযাত্রা ঘিরে যে ভাবে মেলা বসত, তা-ও হবে।’’
বৈরাগী দিঘি সংলগ্ন মদনমোহন মন্দির থেকে গুঞ্জবাড়ি ডাঙ্গরাই মন্দির পর্যন্ত রথযাত্রা হয়। —নিজস্ব চিত্র।
অতিমারির কারণে গত দু’বছর চিরাচরিত কাঠের রথের চাকা ঘোরেনি। তার পরিবর্তে সুসজ্জিত ট্রাকে করে মদনমোহনের রথযাত্রা হয়েছিল। ফ্লেক্স-সহ নানা উপকরণে সাজানো যন্ত্রচালিত সে রথে চেপে গুঞ্জবাড়িতে নিজের মাসির বাড়িতে পৌঁছেছিলেন মদনমোহন। চলতি বছর অবশ্য কাঠের রথে বসানো হবে মদনমোহনের বিগ্রহকে। ইতিমধ্যেই সে রথ মেরামত করে রঙের কাজ চলছে জোরকদমে। সে কাজ করতে পেরে খুশি বিমল দাস এবং মনোরঞ্জন দাস। রং করতে করতেই বিমল বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে মদনমোহনের রথ রং করতে পারিনি আমরা। রথের দিন মন ভারাক্রান্ত হয়ে যেত। এ বছর আবার সে কাজ করতে পেরে ভাল লাগছে।’’ সাত-আট বছর ধরে এ কাজ করে আসছেন মনোরঞ্জন। গর্বের সুরে তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর রথের দিন আমাদের রং করা রথে চেপেই মাসির বাড়ি যান মদনমোহন!’’