Ratan Bagchi

সিপিএমের সম্পাদক বদল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, শমীকের পরিবর্ত নিয়ে ‘দ্বিমত’, অবশেষে দায়িত্ব রতনকে

প্রসঙ্গত, জেলা স্তরে ‘দলাদলি’ হলে তৃতীয় কাউকে সম্পাদক করে দেওয়া আলিমুদ্দিনের বহু ব্যবহৃত কৌশল। সরকার থেকে চলে যাওয়ার পর গোষ্ঠীকোন্দলে দীর্ণ হুগলি জেলা সিপিএমে এই অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল সিপিএম।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৩
Share:

রতন বাগচী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

মেয়াদের মাঝপথে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় সম্পাদক পদে বদল করল সিপিএম। শমীক লাহিড়ীর বদলে সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হল বাটানগরের নেতা রতন বাগচীকে। যদিও সিপিএম সূত্রে খবর, নতুন সম্পাদকের নাম নিয়ে দলের মধ্যে ভিন্ন মত ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত জেলা কমিটির সভায় ভোটাভুটি এড়িয়েই ‘সর্বসম্মতিক্রমে’ রতনের নাম গৃহীত হয়েছে।

Advertisement

শমীক যে জেলা সম্পাদক পদ ছাড়ছেন তা আগেই লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক জন তিনটি স্তরে থাকতে পারেন না। শমীক জেলা সম্পাদকের পাশাপাশি দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তা ছাড়া নভেম্বরের গোড়ায় সিপিএমের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন থেকে ডায়মন্ড হারবারের প্রাক্তন সাংসদ শমীককে দলের প্রভাতী দৈনিক মুখপত্রের সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে আলিমুদ্দিন। ফলে এই বদল অনিযার্যই ছিল।

নতুন সম্পাদকের দৌড়ে দু’টি নাম ছিল। রাজ্য কমিটির সদস্য রাহুল ঘোষ ও তরুণ নেতা প্রভাত চৌধুরী। তবে প্রভাত নিজেই দায়িত্ব নিতে রাজি ছিলেন না। সিপিএম সূত্রে খবর, শনিবার জেলা কমিটির বৈঠকের আগে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হয়। সেখানে রাহুলের নাম প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু তাঁর নামে আপত্তি ওঠে। দলীয় সূত্রে খবর, জেলার চার জন রাজ্য কমিটির সদস্যের মধ্যে দু’জন রাহুলের নামে সম্মতি জানান। বাকি দু’জন রতনের নামে সায় দেন। সিপিএম সূত্রে খবর, রাহুলের নামে রাহুল নিজে এবং ছাত্রনেতা প্রতীক-উর রহমান রহমান সম্মতি দিয়েছেন। অন্য দিকে, বিদায়ী জেলা সম্পাদক শমীক এবং ক্ষেতমজুর আন্দোলনের নেতা তুষার ঘোষ সম্মতি দেন রতনের নামে। এর পর রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর ‘হস্তক্ষেপে’ রতনকেই নতুন জেলা সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের পরে জেলা কমিটির বৈঠকে ভোটাভুটির আবহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা-ও আটকানো হয়েছে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর ‘হস্তক্ষেপে’। ফলে বিকল্প হিসেবে চলে আসে শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা রতনের নাম।

Advertisement

প্রসঙ্গত, জেলা স্তরে ‘দলাদলি’ হলে তৃতীয় কাউকে সম্পাদক করে দেওয়া আলিমুদ্দিনের বহু ব্যবহৃত কৌশল। সরকার থেকে চলে যাওয়ার পর গোষ্ঠীকোন্দলে দীর্ণ হুগলি জেলা সিপিএমে এই অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল সিপিএম। অনিল বসু এবং সুনীল সরকারের বিবাদের মাঝে প্রাক্তন উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরীকে জেলা সম্পাদক করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এই তিন নেতাই অধুনাপ্রয়াত। ২০১২ সালে আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদ অনিলকে বহিষ্কারও করেছিল দল। ২০১১ সালেই উত্তর ২৪ পরগনার কোন্দলের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দেবকে জেলা সম্পাদক করে দেওয়া হয়েছিল। গৌতমকে তিন স্তরে থাকার বিষয়ে ‘বিশেষ অনুমতি’ দিয়েছিল সিপিএম পলিটব্যুরো। একই ভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রতনকে জেলা সম্পাদক করা হল বলে ঘরোয়া আলোচনায় জানাচ্ছেন সিপিএম নেতারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement