জামুড়িয়ার সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
জামুড়িয়ায় টাউন হলের মাঠে দিন কয়েক আগে সভা করে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র টিপ্পনী কেটে গিয়েছিলেন, ভারী শিল্পের পাশাপাশি বাম আমলে ক্ষুদ্র-কুটির শিল্পেরও রমরমা দেখেছিল আসানসোল। আর এখন সেখানে শাসক দলের তোলাবাজির ‘হুঙ্কারে’ শিল্প গোটাচ্ছেন উদ্যোগপতিরা।
শনিবার সেই মাঠেই সভা করে, বাম আমলের শিল্প-প্রসারের দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানালেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলছেন—‘‘সূর্যকান্তবাবুদের বলছি, সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীকে গালাগাল না করে পছন্দের টিভি চ্যানেল বাছুন। সেখানে আমিও বসব। ৩৪ বছরের বাম জমানা বনাম ৪ বছরের তৃণমূল সরকারের হিসেব তুলে ধরব।’’
তৃণমূল সাংসদের ঘোষণা, বিরোধীরা যদি প্রমাণ করতে পারেন, সাড়ে চার বছরের তৃণমূল সরকার যে পরিমাণ ‘কাজ’ করেছে তার দশ শতাংশ কাজ সাড়ে তিন দশকের ‘বাম রাজত্বে’ হয়েছিল, তাহলে ইস্তফা দেবেন তিনি। দু’দিন আগে, সরকারের বিরুদ্ধে সূর্যবাবুর তোলা প্রশ্ন কিংবা উন্নয়নের পরিসংখ্যানের পাল্টা জবাব দিয়েই এ দিন জামুড়িয়ায় সভা শুরু করে ছিলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘ওরা ভাবছে (সিপিএম), দলে নেতৃত্ব বদলে আবার সন্ত্রাস চালিয়ে ক্ষমতা দখল করবে। আমি বলতে চাই, বিমান আকাশে ওড়ে। সূর্যও আকাশে ওঠে। ওরা যা ভাবছে ভুল ভাবছে।’’
বিরোধীদের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতারও ইঙ্গিত দিতে ছাড়েননি তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘অধীর চৌধুরী বারবার সাংবাদিক সম্মেলন করছেন। কিন্তু রাহুল সিংহ বা সিপিএমকে নিয়ে কোনও কথা বলতে দেখা যাচ্ছে না। একই ভাবে বিজেপি এবং সিপিএম-ও একই ভূমিকা পালন করছে।’’
তবে আসানসোলের প্রচারে সূর্যকান্তকে আক্রমণ শানিয়ে গেলেও অভিষেকের চ্যালেঞ্জকে আমল দিতে রাজি নন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ছেলেপিলেদের তুলনায় অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলাই ভাল। ওঁর অভিভাবক, অর্থাৎ ওঁর পিসি বিধানসভাতেই আমাদের মুখোমুখি হতে ভয় পান। আগে অভিভাবক আমাদের মুখোমুখি হন, তার পরে তাঁর ভাইপোকে নিয়ে ভাবা যাবে।’’
জামুড়িয়ার পরে আসানসোলের ধাদকার মাঠে সভা ছিল অভিষেকের। সেখানে অবশ্য তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য ছিল নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘মোদী বা বাবুল যেমন আপনাদের চোখে ধুলো দিয়েছে, তেমনই আপনাদের ওদের চোখে ধুলো দিতে হবে।’’