দল বিব্রত হয় এমন কিছু করা যাবে না, নির্দেশ অভিষেকের

২১শে জুলাইয়ের শহীদ দিবসকে সামনে রেখে রানাঘাটে কর্মিসভা করলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যুব নেতা অভিষেক তাঁর বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়ান। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ার ১৭টি বিধানসভাতেই জেতার লক্ষ্যে ঝাঁপাতে হবে বলে কর্মীদের মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের এই রাজ্য নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৫ ০০:৩৩
Share:

যুবনেতা হিরণ মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মাঝে অভিষেক। -নিজস্ব চিত্র

২১শে জুলাইয়ের শহীদ দিবসকে সামনে রেখে রানাঘাটে কর্মিসভা করলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যুব নেতা অভিষেক তাঁর বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়ান। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ার ১৭টি বিধানসভাতেই জেতার লক্ষ্যে ঝাঁপাতে হবে বলে কর্মীদের মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের এই রাজ্য নেতা। অন্য দিকে, সংগঠন দৃঢ় করতে কী কী করণীয়, পার্থবাবু উপস্থিত কর্মীদের সেই নির্দেশ দেন।
বুধবার বিকালে নদিয়ার রানাঘাট ফ্রেন্ডস ক্লাব ময়দানে ওই সভা হয়। প্রথমে বক্তব্য রাখেন পার্থবাবু। পরে অভিষেক তাঁর ভাষণে অভিযোগ করেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার প্রতি ধারাবাহিক বঞ্চনা করছে। অন্য রাজ্যকে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হলেও এ রাজ্যকে তা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা সভা করে চলে যাওয়ার পর কেউ বলবে আমি মিথ্যা কথা বলেছি। বাপের বেটা হলে মিথ্যা মামলা করুক।’’ মামলা বা এফআইআর-এ তিনি ভয় পান না, তা-ও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। অভিষেকের দাবি, ‘‘দলের বিরুদ্ধে যত কুৎসা হচ্ছে, দল তত শক্তিশালী হয়েছে। সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি বাংলায় দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা করতে দেবেন না।’’ বিজেপি-র নাম না করে তৃণমূলের যুবরাজের তোপ, ‘‘একটা বিধায়ক নিয়ে বাংলা দখলের চেষ্টা চলছে। তা কখনই সম্ভব হবে না।’’
অভিষেকের ব্যাখ্যা, ‘‘করুণানিধি, জয়ললিতা, লালু, নীতিশকে দিয়ে যেটা সম্ভব হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভয় দেখিয়ে সেটা হবে না। তিনি বিশুদ্ধ লোহা। অন্য ধাতুতে তৈরি। তিনি রাস্তায় নেমে মানুষের কাজ করেন। রাজ্যে উন্নয়ন করে চলেছেন।’’ গত ৪ বছরে রাজ্যে যে উন্নয়ন হয়েছে, দেশের অন্য কোনও রাজ্যে হয়নি বলে দাবি তৃণমূলের যুব নেতার। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বুদ্ধদেববাবু দাড়ি রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন সিপিএম ঘুড়ে দাঁড়াবে। কিন্তু, ঘুরে দাঁড়ানো দূর। উঠেও দাঁড়ায়নি। তাই তা কেটে ফেলেছেন। সকলে বুঝেতে পারছেন আগামী ৫০ বছরে সিপিএম আর ফিরবে না।’’

Advertisement

সংগঠন আরও শক্তিশালী করতে কিছু নির্দেশ দেন পার্থবাবু। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এখন মিছিলের অভ্যাস কমে গিয়েছে। সেটা বাড়াতে হবে। মিছিলের মাধ্যমে আমাদের কথা তুলে ধরতে হবে। পথসভা করে রাজ্য সরকারের কাজের কথা প্রচার করতে হবে।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘সংযত থাকুন। দল বিব্রত হয় এমন কিছু কাজ করবেন না। যাঁরা আমাদের ভোট দেয়নি, তাঁদের কাছেও যেতে হবে। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। যাঁরা বুথে কাজ করেন, তাঁদের প্রাথমিক সদস্য করতে হবে।’’

এ দিনের সভায় নদিয়া জেলা আইএনটিইউসি সভাপতি শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগ দেন। মঞ্চে হরিণঘাটা, বীরনগর-সহ বিভিন্ন পুরসভার পুরপ্রধানদের উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। তবে মঞ্চে ছিলেন না রানাঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তাপস ঘোষ-সহ বেশ কয়েক জন নেতা। কেন? তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, তাপসবাবু মুকুল-ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁকে এড়িয়ে চলতে চেয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তাপসবাবু। তিনি শুধু বলেন, ‘‘দলকে ভালবাসি। তাই এসেছি। আমকে কেউ ডাকেওনি।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement