মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়। ফাইল চিত্র।
কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়কে পরিকল্পনা করে তাঁরই গাড়ির চালক রাজু মণ্ডল অপহরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়। এ বারে পাল্টা অভিযোগ করলেন রাজুর স্ত্রী শম্পা মণ্ডল। তিনি দাবি করেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা-১২টা নাগাদ শুভ্রাংশু রায়ের স্ত্রী তাঁদের বাড়িতে এসে তাঁর পরিবারের লোকজনকে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন। শম্পার বক্তব্য, “এই কথা শোনার পর থেকেই আমরা আতঙ্কে রয়েছি।” ঘটনার কথা অস্বীকার না-করে বুধবার শুভ্রাংশু বলেন, “এক জন গাড়িচালকের কাজ কী? সে যদি তার মালিককে নিয়ে, কাউকে কিছু না জানিয়ে বিমানবন্দরের মাঝখানে গাড়ি রেখে, চাবি না দিয়ে বিমানে উঠে চলে যায়, তা হলে কী বলা হয়?’’ তিনি বলেন, ‘‘বেতন নেয় আমার থেকে, আর বাবার সঙ্গে দিল্লিতে বসে রয়েছে!” রাজু দিল্লি থেকে ফোনে এ দিন বলেন, “এই রকম একটা ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। স্যরকে (মুকুল রায়) বলেছি। স্যর বলেছেন, এই রকম হয়। এটা নিয়ে ভাবতে হবে না।”
নিরাপত্তারক্ষীদের কলকাতা বিমানবন্দরের বাইরে রেখেই সোমবার রাতে দিল্লি যান মুকুল রায়। তার পরেই তাঁর পুত্র তথা প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশু জানান, বাবার মাথার ঠিক নেই। সোমবার সন্ধ্যায় কলকাতা ছেড়ে ‘চুপি চুপি’ দিল্লি চলে যাওয়ার শুভ্রাংশু দাবি করেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদনাম করতে বাবাকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে।
তবে তিনি যে ‘নিখোঁজ’ নন, দিল্লি পৌঁছে তা জানিয়ে দেন মুকুল রায়। যেমন সোমবার রাতে জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। মুকুল ‘নিখোঁজ’ বলে যখন বলা হচ্ছে, তখনই একটি বেসরকারি সংস্থার উড়ানের যাত্রী মুকুলের বোর্ডিং কার্ডের ছবি দিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন জানিয়েছিল, মুকুল দিল্লিতেই গিয়েছেন। তার পর থেকে মুকুলকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছে। বুধবার মুকুলকে নিয়ে মুখ খোলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, ‘‘উনি তো বিজেপির বিধায়ক। ওঁর ছেলে একটা মিসিং ডায়েরি করেছে বলে শুনেছি। কেউ যদি বাবা মিসিং বলে ডায়েরি করে, তবে প্রশাসনের কাজ তিনি কোথায় আছেন, তিনি ভাল আছেন কি না তার খোঁজ নেওয়া।’’ বিজেপি বা কোনও এজেন্সি এর পিছনে রয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁর ছেলেই এফআইআর-এ বলেছেন, আমার বাবা মিসিং। দু’জন নিয়ে গিয়েছে কোনও এজেন্সির মাধ্যমে। বিজেপি কি না আমি বলতে পারব না। হতে পারে তাঁকে কোনও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।’’