গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দলের বৈঠকে মঙ্গলবার যাননি। কিন্তু সেই বৈঠকের অব্যবহিত পরেই নেটমাধ্যমে বেসুরে গাইতে শুরু করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার যখন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কলকাতায় দলের বৈঠক করছেন, তখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রয়েছেন দিল্লিতে। এবং সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর তিনি জানিয়েছেন, বাংলায় ভোট-পরবর্তী হিংসা যেখানে পৌঁছেছে, তা ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করার পক্ষে যথেষ্ট। বস্তুত, একধাপ এগিয়ে শুভেন্দু জানিয়েছেন, রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ না করলেই আশ্চর্য! তার পরেই রাজীব তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ৩৫৬ ধারার জুজু না দেখিয়ে কোভিড ও ইয়াস মোকাবিলায় বাংলার মানুষের পাশে থাকা উচিত।’
রাজীবের ওই পোস্ট প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি শুভেন্দু। রাজ্য বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু জানিয়েছেন, রাজীব এখনও তাঁদের দলের সদস্য। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে দল কথা বলবে। প্রসঙ্গত, নেটমাধ্যমে ‘মর্জিমাফিক’ পোস্ট আটকাতে মঙ্গলবারেই একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য বিজেপি। রাজীবের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ওই কমিটি কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না, সেটাই দেখার। তবে বিজেপি-র একাংশের অনুমান, ব্যবস্থা নিলে রাজীবের সুবিধাই হবে। তাতে ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিজেপি-র সঙ্গে তাঁর ‘দূরত্ব’ আরও প্রকট হবে। যা পক্ষান্তরে তাঁকে তৃণমূলের সঙ্গে নৈকট্য রচনায় সাহায্য করবে।
মঙ্গলবার নেট মাধ্যমে রাজীব লেখেন, ‘সমালোচনা তো অনেক হল...মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভাল ভাবে নেবে না। আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস, এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।’ রাজীব নেটামাধ্যমে ওই বিবৃতি ছাড়া মৌখিক ভাবে কোনও কতা বলেননি। তবে রাজীবের এমন বক্তব্যের আগেই ফেসবুকে সরব হয়েছিলেন মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশুও। বিজেপি-র অন্দরের খবর, দু’জনের সঙ্গেই দলের দূরত্ব ক্রমবর্ধমান।