রবিবার ডুমুরজলার মঞ্চে সমাবেশ বিজেপির। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি-তে অনেক স্লোগান। নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে রাজ্য বিজেপি যখন ‘আর নয় অন্যায়’ বলে সরব হচ্ছে তখন অমিত শাহ-র বেঁধে দেওয়া স্লোগান— ‘অব কি বার, দোশো পার’। এত সবের মধ্যেও নতুন স্লোগান নিয়ে এলেন দলে নবাগত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলত্যাগী রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নতুন দলের মঞ্চে প্রথমবার উঠেই স্লোগান দিলেন— ‘চলুন পাল্টাই’।
রবিবার ডুমুরজলার সমাবেশ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। স্লোগানের ব্যাপারে তিনিও কম যান না। রবিবার তাঁর মুখে বারবার শোনা যায়— ‘একসাথে লড়ব, সোনার বাংলা গড়ব’। তবে সে সব ছাপিয়ে যায় রাজীবের মুখে ওঠা আরও একটি স্লোগান। সেটা অবশ্য তাঁর ছেড়ে আসা দলের জনপ্রিয় স্লোগানেরই অনুকরণ। তিনি বিরোধী দলে থাকার সময়েই তৃণমূলের ‘চুপচাপ, ফুলে ছাপ’ স্লোগানটি জনপ্রিয় হয়েছিল। রবিবার তারই অনুকরণে রাজীব শোনালেন, ‘চুপচাপ, পদ্মফুলে ছাপ’।
বিজেপি-র অন্যান্য সভা, সমাবেশের মতো রবিবারেও ‘জয় শ্রীরাম’, ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান ছিলই। তারই মধ্যে নতুন স্লোগান তুললেন রাজীব। এর আগে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীও নতুন স্লোগান এনেছেন— ‘হরে কৃষ্ণ হরে হরে, বিজেপি ঘরে ঘরে।’ সেই স্লোগান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুকরণ করছেন বলেও ইদানীং বিভিন্ন সভায় সরব হয়েছেন শুভেন্দু। রাজীবের তোলা ‘চুপচাপ’ স্লোগান নিয়েও কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র নির্বেদ রায় বলেন, ‘‘যে নেতা দল ছাড়ার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে যেতে পারেন, তিনি যে স্লোগানও নিয়ে যাবেন সেটাই তো স্বাভাবিক।’’
তৃণমূল যাই বলুক, রাজীবের তোলা ‘চুপচাপ’ স্লোগান রবিবার ডুমুরজলার সমাবেশে উপস্থিত থাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির যে বেশ পছন্দ হয়েছে সেটা স্পষ্ট করে দেন তিনিই। স্মৃতি বক্তব্যের মধ্যে একটু বদলে স্লোগান তোলেন— ‘চুপচাপ চুপচাপ, পদ্মেছাপ পদ্মেছাপ’। এ টুকুই নয়, স্মৃতির বক্তব্যে আরও একবার স্লোগানের সুরেই শোনা যায়— ‘টিএমসি যাচ্ছে, বিজেপি আসছে’। রবিবারের সভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন অমিত শাহ। দিল্লিতে তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছিলেন তার পিছনে থাকা ব্যানারেও লেখা ছিল বঙ্গ বিজেপির জন্য তৈরি নয়া স্লোগান— ‘অপশাসন হঠাও : গণতন্ত্র বাঁচাও’।
শুধু নতুন স্লোগানই নয়, রবিবার ডুমুরজলার মঞ্চে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নবাগতদেরই দাপট ছিল বেশি। মঞ্চে উপস্থিত সকলে এক সঙ্গে ছবি তোলার সময়ে বাদই পড়ে যান উত্তরপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য। দেখা যায়, তিনি নিজের উদ্যোগেই জায়গা করে নিচ্ছেন রাজীব ও প্রবীর ঘোষালের মাঝখানে। সেই সময় ঠেলাঠেলি সামলে দাঁড়িয়ে থাকা দিলীপ ঘোষের মুখের মাস্কটিও খসে পড়ে মঞ্চে।