রাজীব কুমার
বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে সিবিআই। এই নিয়ে আইনি লড়াই পর্বে তাঁর স্ত্রী, আইআরএস অফিসার সঞ্চিতা কুমারকে ‘এক্স’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নিরাপত্তা ডিরেক্টরেট। চলতি মাসেই ভবানী ভবনে ডিরেক্টরেটের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সিআইডি-প্রধান রাজীবের স্ত্রীকে সর্বক্ষণের দেহরক্ষী দেওয়া হবে। বৈঠকে ‘স্টেট প্রোটেক্টি লিস্ট’-এর একেবারে শেষে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সঞ্চিতাদেবীর নাম।
সঞ্চিতাদেবী আয়কর বিভাগের কমিশনার। অর্থ মন্ত্রকের অধীন ওই সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকদের পুলিশি নিরাপত্তা পাওয়ার নজির নেই। তবে রাজীবের স্ত্রী হিসেবে সঞ্চিতাদেবীর ব্যাপারে কিছু ‘খবর’ গোয়েন্দা-কর্তাদের কানে এসেছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকার তাঁকে সর্বক্ষণের নিরাপত্তারক্ষী দিচ্ছে। রাজ্য নিরাপত্তা ডিরেক্টরেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘সারদা তদন্তের সময় নানা বিতর্ক, জল্পনা শোনা যাচ্ছিল। তখনই সঞ্চিতাদেবীর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। ৭ নভেম্বরের বৈঠকে স্থায়ী ভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভিআইপি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে গোয়েন্দা-প্রধানের স্ত্রীকে।’’
ফেব্রুয়ারিতে রাজীবের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। পাল্টা হিসেবে সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তবের অফিস ও বাড়ি ঘিরে ফেলে কলকাতা পুলিশ। সে-দিন নিজাম প্যালেসে যুগ্ম অধিকর্তার বাড়িতেও কড়া নেড়েছিলেন কয়েক জন পুলিশ অফিসার। সিবিআই তাঁদের চিহ্নিত করেছিল। সেই ঘটনার পরেই সিবিআই যুগ্ম অধিকর্তা ও তাঁর পরিবারের জন্য সিআরপি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সিবিআই অফিস থেকে কার্যত ছুটি করে দেওয়া হয় কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা কর্মীদের।
আরও পড়ুন: জমি ফেরাতে মমতাই পথ, বলছে তৃণমূল
তার পরেই রাজীবকে হেফাজতে চেয়ে আইনি লড়াই জোরদার করে সিবিআই। গ্রেফতারি এড়াতে গোয়েন্দা-প্রধানকে প্রায় এক মাস গোপন ডেরায় থাকতে হয়েছে। ১ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিন পান তিনি। সেই জামিন বাতিলের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই।
রাজ্য নিরাপত্তাকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, সারদা তদন্তে রাজীব ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’। সংবাদমাধ্যম থেকে আমানতকারী—তাঁর সম্পর্কে ভুল ধারণা করেছেন অনেকেই। তাঁর পরিবারেও এর প্রভাব পড়ছে। রাজীব-পত্নীকে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে এগুলো মাথায় রাখা হয়েছে।