Mithun Chakraborty

বাংলায় জল্পনা বাড়িয়ে দিয়ে নাগপুরে সঙ্ঘ সদর দফতরে মিঠুন চক্রবর্তী

আরএসএস সদর দফতরে বৃহস্পতিবার বেশ অনেকটা সময়ই কাটান বলিউডের বাঙালি স্টার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ২০:৪৪
Share:

সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ারের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী।—নিজস্ব চিত্র।

প্রথমে ছিলেন বামেদের ঘনিষ্ঠ। ২০১৪-র মাঝামাঝি থেকে ২০১৬-র শেষ পর্যন্ত ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ। প্রখ্যাত বলিউড স্টার মিঠুন চক্রবর্তীকে এ বার দেখা গেল গেরুয়া শিবিরে। তা নিয়ে জল্পনাও ক্রমশ বাড়তে শুরু করল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মিঠুন চক্রবর্তী গিয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর সদর দফতরে। মহারাষ্ট্রের নাগপুরে সঙ্ঘের সদর দফতর। সঙ্ঘের প্রথা অনুযায়ী, কোনও বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সদর দফতরে স্বাগত জানানো হলে তাঁকে শুরুতেই নিয়ে যাওয়া হয় সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারের মূর্তির সামনে। বৃহস্পতিবার মিঠুন চক্রবর্তীও সেই প্রথা অনুসরণ করেছেন এবং হেডগেওয়ারের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

আরএসএস সদর দফতরে বৃহস্পতিবার বেশ অনেকটা সময়ই কাটান বলিউডের বাঙালি স্টার। সঙ্ঘের বেশ কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে মিঠুনের কথা হয় বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কাদের সঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তীর কথা হয়েছে এবং কী বিষয়ে কথা হয়েছে, তা নিয়ে সঙ্ঘের তরফে কিছু জানানো হয়নি। মিঠুন নিজেও এখনও তা নিয়ে বাইরে কোথাও মুখ খোলেননি।

Advertisement

নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতরে মিঠুন। —নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: রাজীবকে হাতে পেতে এ বার রোজভ্যালি মামলায় নজর সিবিআইয়ের​

বাম জমানায় মিঠুন চক্রবর্তী কিন্তু সিপিএম নেতৃত্বের বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তৎকালীন ক্রীড়া ও পরিবহণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর অত্যন্ত কাছের ছিলেন মিঠুন। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্কের কথাও সুবিদিত ছিল। ২০০৯ থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। প্রকাশ্যেই তৃণমূলের কাছাকাছি আসতে শুরু করেন মিঠুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৪ সালে মিঠুনকে রাজ্যসভার টিকিট দেন এবং তৃণমূল সাংসদ হিসেবে সংসদে যান অভিনেতা।

বিতর্ক শুরু তার কিছু দিন পরেই। বেআইনি অর্থলগ্নি কেলেঙ্কারিতে তৃণমূলের একগুচ্ছ মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কের নাম জড়ায়। মিঠুন চক্রবর্তী ছিলেন তাঁদের অন্যতম।

এত বড় দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় দৃশ্যতই ভেঙে পড়েছিলেন মিঠুন। সারদা গোষ্ঠীর কাছ থেকে পাওয়া টাকা তিনি ফিরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। ইডি-র কাছে টাকা ফেরতও দিয়েছিলেন। তাতেই অবশ্য মিঠুন থেমে থাকেননি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি সাংসদ পদেও ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন এবং বেশ কয়েকটা বছরের জন্য প্রায় জনচক্ষের অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: রাজীবের জামিনের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে গেল সিবিআই

সম্প্রতি একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলের এক রিয়েলিটি শোয়ের দৌলতে ফের জনসমক্ষে আসতে শুরু করেন মিঠুন চক্রবর্তী। তবে তার আগেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলেছিলেন। বিজেপির দিকে ঘেঁষতে শুরু করেছেন বলেও গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। তৃণমূলের কেউ প্রকাশ্যে তা নিয়ে মিঠুন চক্রবর্তীকে আক্রমণ করেননি। তবে সারদা তদন্ত থেকে বাঁচতে মিঠুন বিজেপির শরণাপন্ন হয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে একাধিক তৃণমূল সাংসদ ও নেতাকে মন্তব্য করতে শোনা যাচ্ছিল।

বিজেপির পতাকা হাতে নিতে এখনও দেখা যায়নি মিঠুন চক্রবর্তীকে। কিন্তু বিজেপির আদর্শগত নিয়ন্ত্রণ যে সংগঠনের হাতে, সেই আরএসএস সদর দফতরে মিঠুনকে দেখা যাওয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement