কাজে যাওয়ার জন্য ভোরের ট্রেন ধরতে বেরিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে কিছুটা এগোতেই পথ আটকাল ছিনতাইবাজরা। মোবাইল ও টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ভোজালির কোপ পড়ল গলায়, পেটে। ছটছট করতে করতে ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারালেন।
আধ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দূরে ফের ছিনতাইবাজদের দৌরাত্ম্য। মাথায় ভোজালির কোপে গুরুতর জখম আরও এক জন। তার পরে ছিনতাইবাজদের কবলে পড়লেন এক ব্যবসায়ীও। ভোটের মুখে কোন্নগরে এই দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত মানুষ। নিহত জয়প্রকাশ গুপ্ত (৫৭) ওই এলাকারই বাসিন্দা। হাওড়া স্টেশনে টিকিট বুকিং কাউন্টারে কাজ করতেন। অন্য ঘটনাগুলি ঘটে ক্রাইপার রোডে ও বাটার মোড়ে। পুলিশ জানায়, এ দিন ভোরে আদর্শনগরে পুলিশ টহল দিয়েছে। পুলিশের গাড়ি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই খুনের ঘটনাটি ঘটে। পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীরা পুলিশের গতিবিধির উপরে নজর রেখেছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আদর্শনগরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন জয়প্রকাশবাবু। এ দিন ভোর ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে হেঁটে স্টেশনে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই আক্রান্ত হন। জয়প্রকাশবাবুর ব্যাগটি পরে পুলিশ ওই এলাকা থেকেই উদ্ধার করে। তাতে অফিসের পরিচপত্র ও কাগজপত্র ছাড়া কিছু ছিল না। এই ঘটনার আধ ঘণ্টার মধ্যে স্টেশন এলাকারই ক্রাইপার রোডে বাবু দাস নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথায় ভোজালি দিয়ে আঘাত করে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাবু বলেন, ‘‘চলচিত্রম মোড়ের কাছে এক দুষ্কৃতী টাকা চায়। টাকা দেওয়া সত্ত্বেও আমার মাথায় ভোজালির আঘাত করে।’’ বাবুর পরে এই ক্রাইপার রোডে আরও এক জন ছিনতাইবাজের কবলে পড়েন। তাঁকেও মারধর করা হয়। বাটার মোড়ে এক মাছ ব্যবসায়ীর টাকাও ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা।
এলাকার মানুষের প্রশ্ন, ভোটকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা আঁটোসাটো করার কথা বলছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তার পরেও কী ভাবে সাহস পাচ্ছে দুষ্কৃতীরা? এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতিকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিরোধী দলগুলি।