চলতি মরসুমে বাজ পড়ছে ঘনঘন। তাতে প্রাণহানি তো বাড়ছেই। ব্যাহত হচ্ছে বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা-নির্ভর নানা ধরনের কাজকর্মও। যেমনটি ঘটল মঙ্গলবার। এ দিন বজ্রপাতের ধাক্কায় রেলের সার্ভার অকেজো হয়ে যাওয়ায় দুপুরের পর থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পূর্ব ভারতের রেল টিকিট সংরক্ষণ ব্যবস্থা।
রেল সূত্রের খবর, বেলা ৩টে ৪৫ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা রেলের অনলাইনে ই-টিকেটিং বা পিআরএস (প্যাসেঞ্জার রিজার্ভেশন সিস্টেম) কাউন্টার কাজ করেনি। অকেজো হয়ে যায় ১৩৯ নম্বরের হেল্পলাইনও। ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে।
পৌনে ৪টে নাগাদ ১৪ নম্বর স্ট্র্যান্ড রোডে সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফর্মেশন সিস্টেম (ক্রিস)-এর পূর্বাঞ্চলীয় কার্যালয়ের ছাদে আচমকা বাজ পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই বেশ কয়েকটি কম্পিউটার বিকল হয়ে যায়। সাময়িক ভাবে ওই দফতরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ‘ক্রিস’-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় সেকেন্দরাবাদের মূল সার্ভারের সঙ্গে। বিপত্তি এখানেই শেষ হয়নি। কিছু ক্ষণের মধ্যে সমস্যা দেখা দেয় সেকেন্দরাবাদের মূল সার্ভারেও। ফলে পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে দুই শতাধিক টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্র সাময়িক ভাবে অকেজো হয়ে যায়। কাজ করেনি আইআরসিটিসি-র ই-টিকেটিং ব্যবস্থাও। ফলে অনলাইনে টিকিট কাটতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ভীষণ সমস্যায় পড়তে হয়।
সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিট নাগাদ মূল সার্ভারের একাংশে মেরামতির কাজ শেষ হয়। আবহাওয়ার উন্নতি হতে থাকায় পুনঃস্থাপিত হয় কলকাতা-সেকেন্দরাবাদ ইন্টারনেট যোগাযোগও। প্রথমে চালু করা হয় ১৩৯ হেল্পলাইন। এর পরে বন্ধ হয়ে থাকা আইআরসিটিসি-র অনলাইন টিকিট সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু হয়।
রেলের এক আধিকারিক জানান, রাজধানী বা দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনের যাত্রীদের সংরক্ষণ-তালিকা আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তাই ওই সব ট্রেন ছাড়তে সমস্যা হয়নি। সন্ধ্যার ট্রেনগুলির চার্ট ঘণ্টা চারেক আগে তৈরি হয়ে থাকায় কোনও মতে সামাল দেওয়া গিয়েছে। তবে সার্ভার মেরামতিতে সময় বেশি লাগলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারত।
প্রশ্ন উঠছে, অন্যান্য বহুতলের মতো গুরুত্বপূর্ণ অফিস-কাছারিতেও তো বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা থাকার কথা! তার কী হল? এক রেলকর্তা জানান, স্ট্র্যান্ড রোডে ক্রিস-এর ওই কার্যালয়ে বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও বিপর্যয় এড়ানো যায়নি। আজ, বুধবার স্বাভাবিক নিয়মেই টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্র খুলবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকেরা।