Local Train

দার্জিলিং মেলের এসি কামরায় মহিলা যাত্রীর যৌন হেনস্থার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

স্টেশন ছাড়ার পরেই তিনি শৌচাগারে যান। সেখান থেকে নিজের সিটে তিনি যখন ফিরছিলেন, সেই সময় উল্টো দিক থেকে আসছিলেন উর্দি পরা এক পুলিশ কর্মী। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওই পুলিশ কর্মী ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর গায়ে হাত দেন এবং যৌন হেনস্থা করার চেষ্টা করেন, মহিলার অভিযোগ এমনই। সিটে ফিরে এসে তিনি ঘটনাটি তাঁর স্বামীকে বলেন। কিন্তু, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা চুপচাপই ছিলেন। ভাবেননি, ওই পুলিশ কর্মী ফের ফিরে আসবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:১১
Share:

চলন্ত ট্রেনে ফের নিরাপত্তা রক্ষীর হাতে যৌন হেনস্থার অভিযোগ। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

নামখানা লোকালের পর এ বার দার্জিলিং মেল। চলন্ত ট্রেনে ফের নিরাপত্তা রক্ষীর হাতে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুললেন এক মহিলা যাত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে বরাহনগরের ওই যুবতী শিয়ালদহ রেল পুলিশ (জিআরপি)-এর কাছে এফআইআর দায়ের করেছেন।

Advertisement

ওই যুবতী কয়েক দিন আগে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দার্জিলিং বেড়াতে গিয়েছিলেন। বুধবার রাতে তাঁরা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং মেলে ওঠেন। এসি থ্রি টিয়ারের বি-৪ কামরায় তাঁদের সংরক্ষণ ছিল। বছর আঠাশের ওই যুবতী শিয়ালদহ জিআরপি-র কাছে করা তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, দার্জিলিং মেল কিসানগঞ্জ স্টেশন ছাড়ার পরেই তিনি শৌচাগারে যান। সেখান থেকে নিজের সিটে তিনি যখন ফিরছিলেন, সেই সময় উল্টো দিক থেকে আসছিলেন উর্দি পরা এক পুলিশ কর্মী। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওই পুলিশ কর্মী ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর গায়ে হাত দেন এবং যৌন হেনস্থা করার চেষ্টা করেন, মহিলার অভিযোগ এমনই। সিটে ফিরে এসে তিনি ঘটনাটি তাঁর স্বামীকে বলেন। কিন্তু, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা চুপচাপই ছিলেন। ভাবেননি, ওই পুলিশ কর্মী ফের ফিরে আসবেন।

ওই মহিলার স্বামীর অভিযোগ, খানিক পরেই ওই পুলিশ কর্মী কোনও কারণ ছাড়াই তাঁদের সিটের সামনে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। তাঁকে দেখে চিনতে পারেন ওই মহিলা। তিনি স্বামী এবং পরিবারের সকলকে ইশারায় বুঝিয়ে দেন, ইনিই সেই পুলিশ কর্মী। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কেউই কোনও উচ্চবাচ্য করেননি। ওই পুলিশ কর্মী চলেও যান। এর পর রাতের খাওয়া সেরে ওই যাত্রীরা শুয়ে পড়ার পরে ফের ওই পুলিশ কর্মী আসেল ওই কামরায়। ওই মহিলা ছিলেন মাঝের বার্থে। এ দিন তাঁর স্বামী বলেন, ‘‘অন্ধকারের মধ্যে হঠাৎ লক্ষ্য করি, ওই পুলিশ কর্মী দুই প্রস্ত বার্থের মাঝে ঢুকে আমার স্ত্রীর দিকে এগোচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি চিৎকার করি।” এর পর ওই পুলিশ কর্মী ওই কামরা ছেড়ে চলে যান বলে দাবি তাঁর।

Advertisement

আরও পড়ুন: এনআরসি হবেই বঙ্গে, বাদ যাবে দু’কোটি: দিলীপ

যাত্রীরা এর পর বিষয়টি কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষককে জানান। তিনি যাত্রীদের নিয়ে যান পাশের কামরায় রথীন সরকার নামে এক পুলিশ আধিকারিকের কাছে। ওই পুলিশ আধিকারিকই রাতে ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। মহিলার স্বামীর দাবি, রথীনবাবু সব শুনে তাঁর সঙ্গে থাকা বাকি পুলিশ কর্মীদের ডেকে পাঠান। সেখান থেকেই ওই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে শনাক্ত করেন অভিযোগকারিণী এবং তাঁর স্বামী। এর পর রথীনবাবুর মধ্যস্থতায় ওই পুলিশ কর্মী মহিলার কাছে ক্ষমা চান। মহিলার স্বামী বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে ট্রেন মালদহে এসে পৌঁছয়। আমরা সেখানে অভিযোগ জানাব বলে ঠিক করি। কিন্তু ট্রেন ছেড়ে দেবে বলে সকালে শিয়ালদহ নেমে অভিযোগ জানাই।”

আরও পড়ুন: কন্ঠস্বরের নমুনা দিতে সিবিআই দফতরে পৌঁছেছেন কাকলি, আসবেন কি শুভেন্দু? রয়েছে ধন্দ

শিয়ালদহ জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার বয়ানের ভিত্তিতে একটি ‘জিরো এফআইআর’ নথিভুক্ত করা হয়েছে। যে হেতু ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি জিআরপি-র আওতায় থাকা এলাকায়, সে কারণে সেখানেই পাঠানো হবে ওই এফআইআর। জিআরপি সূত্রে খবর, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর নাম দীপঙ্কর দে। এএসআই পদে তিনি বর্তমানে শিলিগুড়ি জিআরপিতে কর্মরত। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হবে বলেও জানিয়েছে জিআরপি।

আরও পড়ুন: নিচু পদই সই, প্রার্থী মেধাবীরা, বাছাই তালিকার তথ্য ঘিরে বিতর্ক

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement