Indian Railways

কখনও পাঁচ, কখনও সাত, এমনকি কখনও ন’ঘণ্টা দেরিতেও চলছে দূরপাল্লার ট্রেন! নেপথ্যে কী কারণ?

রেলের কোনও কোনও জ়োনের ক্ষেত্রে ট্রেনের সমায়ানুবর্তিতার পরীক্ষায় পাশ নম্বর (লক্ষ্যমাত্রা) ৮৫ শতাংশ। আবার তার লাগোয়া অন্য কোনও জ়োনে ৭৫ শতাংশ, এমনকি ৬৫ শতাংশ পেলেও পাশ করা যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ০৭:১৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

প্রশ্নপত্র একই। অথচ আলাদা আলাদা পড়ুয়ার জন্য পাশ করার নম্বর যেন আলাদা! রেলের সময়ানুবর্তিতার ক্ষেত্রে চালু থাকা নীতিকে এ ভাবেই দেগে দিচ্ছেন রেলকর্তাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, এমন গরমিলের জন্য মাত্রাছাড়া দেরিতে চলছে দূরপাল্লার ট্রেন। কী ভাবে এই জট কাটবে তারও সদুত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না রেলের প্রবীণ আধিকারিকেরা।

Advertisement

রেলের খবর, রেলের কোনও কোনও জ়োনের ক্ষেত্রে ট্রেনের সমায়ানুবর্তিতার পরীক্ষায় পাশ নম্বর (লক্ষ্যমাত্রা) ৮৫ শতাংশ। আবার তার লাগোয়া অন্য কোনও জ়োনে ৭৫ শতাংশ, এমনকি ৬৫ শতাংশ পেলেও পাশ করা যাচ্ছে। তার ফলে খাতায়-কলমে রেলের জ়োনগুলি পাশ করলেও আদতে ট্রেন সময়ে চলছে না। যার জেরে ভুগছেন যাত্রীরা। রেলকর্তারা বলছেন, এমনিতেই ভারতীয় রেলে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে ৭০ শতাংশ সময় মালগাড়ি চলাচলের জন্য বরাদ্দ রাখতে হয়। তার উপরে এক-এক অঞ্চলে রেল লাইনের অবস্থা এবং পণ্য পরিবহণের চাহিদা অনুযায়ী মালদগাড়ি এবং যাত্রিবাহী ট্রেনের সময়ের হার এক-এক ভাবে নির্ধারণও করা হয়। তার উপরে রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির কাজ। তার জেরে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচলে আরও দেরি হচ্ছে। যেমন, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বহু ট্রেন গত এক বছর ধরে কখনও পাঁচ, কখনও সাত, এমনকি কখনও ন’ঘণ্টা দেরিতেও চলছে। এর ফলে হাওড়া-মুম্বই দুরন্তের মতো দামি ট্রেনও আছে।

এই দেরির ক্ষেত্রেই উঠছে জ়োন ভেদে আলাদা আলাদা পাশ নম্বরের প্রসঙ্গ। রেলকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ট্রেনগুলি পূর্ব উপকূল রেল, দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য রেল, দক্ষিণ রেলের মতো একাধিক জ়োন থেকে আসে। যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সময়ানুবর্তিতার লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ শতাংশ সেখানে পূর্ব উপকূল রেলের লক্ষ্যমাত্রা ৭৫ শতাংশ। আবার দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য রেলের লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ শতাংশ। তার ফলে ট্রেন দেরিতে চললেও ওই জ়োনের পাশ করতে সমস্যা হচ্ছে না। সব দায় এসে পড়ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ঘাড়ে।

Advertisement

রেলের খবর, উত্তর ভারত থেকে আসা পূর্ব রেলের ট্রেনগুলির ক্ষেত্রেও একই সমস্যা আছে। তার উপরে কোনও ট্রেন যাত্রা শেষ করার পরে তার রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। সেই কাজ শেষে ফের যাত্রা শুরু করে সে। সময়ের থেকে অনেক দেরিতে ট্রেন এসে পৌঁছলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজেও বিলম্ব হয়। ফলে ট্রেন ছাড়তেও ফের দেরি হয়। নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে ট্রেন ছাড়লে তার জন্য ফাঁকা পথ পাওয়া মুশকিল হয়। তাতেও ফের দেরি হয়। এক রেলকর্তার বক্তব্য, ‘‘এই সমস্যাগুলিকে ট্রেন চলাচলের দুষ্টচক্র বলা যেতে পারে। এক বার সেই চক্রে কোনও ট্রেন ঢুকে পড়লে তার সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা দুঃসাধ্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement