নতুন ব্যবস্থা চালু হলে অনার্সে চার বছরের পাঠ চালু হওয়ার কথা। প্রতীকী ছবি।
উদ্যোগ আছে, বিতর্কও আছে। আবার প্রশ্নও কম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ‘স্ট্যাটিউট’ বা বিধিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন না-করে রাজ্যের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারী ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ (চার বছরের অনার্স-সহ) চালু করা কী ভাবে সম্ভব, প্রশ্ন উঠছে মূলত সেই বিষয়েই। তারই মধ্যে কোথাও কোথাও নতুন ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগের পাশাপাশি জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আদর্শগত আপত্তি-অভিযোগ আর বিতর্ক তো রয়েছেই।
রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়েরই বর্তমান বিধিতে স্নাতক স্তরে তিন বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম এবং দু’বছরের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের কথা বলা আছে। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে অনার্সে চার বছরের পাঠ চালু হওয়ার কথা। তাই মনে করা হচ্ছে, সেই ব্যবস্থার জন্য বিধি বদল জরুরি।
২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত আইনে বেশ কয়েক বার রদবদল হয়েছে। অথচ সামঞ্জস্য রেখে চলার জন্য বিশ্ববিদ্যালগুলির বিধির যে-পরিবর্তন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন, সেই কাজ বাকি পড়ে বহু দিন। সূত্রের খবর, কিছুটা বিধি, কিছুটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তিত আইন— এই রকম জগাখিচুড়ি পদ্ধতিতেই এখন কাজকর্ম চলে বাংলার প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিন্ন বিধি তৈরির লক্ষ্যে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে মাথায় বসিয়ে কয়েক বছর আগে একটি কমিটি গড়া হয়। সেই কমিটি নতুন বিধি তৈরি করে উচ্চশিক্ষা দফতরে জমা দিয়েছিল বলে শিক্ষা প্রশাসন সূত্রের খবর। কিন্তু তার পরে সেই বিষয়ে আর অগ্রগতি হয়নি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘মহামান্য আচার্য এবং উচ্চশিক্ষা দফতর জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে চার বছরের অনার্স পাঠ্যক্রম চালু করতে চাইছেন। কিন্তু কারও বোধ হয় মাথাতেই নেই যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে তিন বছরের পাঠ্যক্রমের কথা বলা আছে। সেটা পরিবর্তন না-করলে এই ডিগ্রি আইনত বৈধ হবে না।’’ পার্থপ্রতিমের অভিযোগ, ২০১১ সাল থেকেই রাজ্য সরকার জোর করে পরিবর্তিত বিধি চালু করতে দেয়নি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, চার বছরের অনার্স এবং এক বছরের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম চালু করতে হলে সর্বাগ্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘এই সব কারণেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের গত বৈঠকে শিক্ষকেরা এত তাড়াহুড়ো করে নতুন কোনও কিছু রূপায়ণ না-করার পরামর্শ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে।’’