প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ।—ফাইল চিত্র।
বর্তমান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই জেলা প্রশাসনকে ব্যাখ্যা-পরামর্শ দিলেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। এতে প্রশাসনের চালু রীতি ভঙ্গ হল কি না, তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।
এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের বৈঠক মঞ্চে বর্তমান মুখ্যসচিবের সঙ্গে প্রাক্তনকে রেখেই প্রশাসনিক বৈঠক শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই মঞ্চ থেকেই একাধিক বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে পরামর্শ দিতে দেখা যায় প্রাক্তন মুখ্যসচিব এবং বর্তমানে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিংহকে।
প্রথমে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মৃত্যুহার, সুস্থতার হার, আক্রান্তের পরিসংখ্যান সবকিছু দিয়ে জেলার কোভিড পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দেন রাজীব সিংহ। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসন কী ভাবে পদক্ষেপ করবে, তার দিগ্নির্দেশও করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীও জেলাশাসকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘পুজোতে পুলিশও ব্যস্ত হবে। তখন যেন অবহেলা না হয়।’’
আরও পড়ুন: মণীশ খুনের প্রতিবাদে কৈলাস-মুকুলেরা, দূরত্ব রাখছেন দিলীপ
পরে রাজ্যের ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্প নিয়েও বৈঠকে রাজীববাবুকে বলতে অনুরোধ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজীব যে হেতু মুখ্যসচিব ছিলেন, তিনি মাটির সৃষ্টি প্রকল্প নিয়েছিলেন। বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর, বীরভূম, ঝাড়গ্রামে প্রকল্পের কাজ হবে। বহু কর্মসংস্থান হবে। লক্ষাধিক কৃষকের সুবিধা হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পের ব্যাখ্যা-সহ জেলা প্রশাসনকে পরামর্শ দিতে দেখা যায় রাজীবকে। পরে বর্তমান মুখ্যসচিবের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘দেখে নাও কাজটা যাতে ঠিক এগোয়।’’
আরও পড়ুন: চাকরি মাওবাদী হানায় নিরুদ্দেশের পরিবারকে
এই ঘটনাগুলি থেকেই প্রশাসনিক রীতি নিয়ে চর্চা শুরু হয়। আমলাদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যসচিবই সাধারণত প্রশাসনিক বৈঠক পরিচালনা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে থাকেন তিনিই। প্রশাসনের শীর্ষকর্তা হিসাবে কোনও বিষয়ের ব্যাখ্যা তাঁরই দেওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: মমতার ঘোষণার পরেও উত্তরের অপেক্ষায় ওঁরা
এই রীতিই এত দিন প্রশাসনে চলে এসেছে। অতীতে কখনও কোনও প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে এ কাজ করতে দেখা যায়নি। তবে অপর একাংশের ব্যাখ্যা, প্রশাসন পরিচালনায় অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিলে রীতিভঙ্গ হয় না। কোভিড পরিস্থিতির শুরু থেকে রাজীব সিংহই মুখ্যসচিব ছিলেন। তার আগে স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বও সামলেছিলেন তিনি। তাঁর অভিজ্ঞতা প্রশাসনের কাজে লাগবে। প্রাক্তন-বর্তমান বন্ধনীতে এই চর্চা অর্থহীন।