হোমের পথে ভাইবোন। ছবি: সুজিত মাহাতো
মাকে খুনের অভিযোগে পুলিশ আগেই গ্রেফতার করেছিল বাবাকে। এবার একই অভিযোগে পুলিশ ঠাকুরদা ও ঠাকুমাকে গ্রেফতার করায় দুই ভাইবোনের ঠাঁই হল হোমে। ঘটনা আড়শা থানা এলাকার হেঁসলা গ্রামের। জেলা চাইল্ড লাইন সূত্রে জানানো হয়েছে, বাড়ির সকলেই গ্রেফতার হওয়ায় দুই নাবালককে দেখভালের কেউ না থাকায় তাঁদের শিশুকল্যাণ কমিটির মারফত হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৮ এপ্রিল হেঁসলা গ্রামের অদূরে ক্ষেতের মধ্যে থেকে সরস্বতী গঁরাই নামে এক তরুণীর গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি হেঁসলা গ্রামেরই বাসিন্দা। ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার চাষ মফস্সল থানা এলাকার ডুমুরদাহা-সিধাবাদ টোলার বাসিন্দা সরস্বতীর সঙ্গে হেঁসলার গৌতম গরাঁইয়ের বিয়ে হয়। মৃতার ভাই ভবানন্দ গরাঁইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ সরস্বতীদেবীর স্বামী গৌতমকে আগেই গ্রেফতার করেছিল। শনিবার গ্রেফতার করা হয় গৌতমের বাবা দুলালবাবু ও তাঁর স্ত্রী নুনিবালাদেবীকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রীর প্রতি অবিশ্বাস থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার সূত্রপাত। সেদিন এলাকায় মেলা চলছিল। মেলা দেখার জন্য রাত্রে স্ত্রীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান গৌতম। তারপর পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে কোনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে মেরে ফেলা হয়।
মায়ের মৃত্যুর পর এবং বাবা গ্রেফতার হওয়ার পরে সরস্বতীদেবীর দুই নাবালক পুত্র-কন্যা মমতা ও রাহুল থাকত তাঁদের ঠাকুরদা-ঠাকুমার কাছে। জেলা চাইল্ড লাইনের এক মুখপাত্র সুস্মিতা সরকার জানান, শনিবার তাঁরা গ্রেফতার হওয়ায় দুই শিশুর দেখভালের কেউ ছিল না বলে তাঁদের দু’ জনকে আমরা জেলা শিশুকল্যাণ কমিটির কাছে নিয়ে আসি। কমিটির সদস্য শ্রীকান্ত গরাঁই বলেন, দুই নাবালককে বর্তমানে হোমে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত সরস্বতীর দুই দেওর ও এক ননদকে খুঁজছে পুলিশ। শনিবার ধৃত দু’জনকে আদালত জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।