ছাদ ফুটো। বৃষ্টির জল ঢুকছে ঘরে। ভিতরের আসবাবপত্র গুটিয়ে বালতি, বাটি, জামবাটি পেতে কোনও রকমে সেই জলকে ধরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।
দৃশ্যটা রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন কলেজ বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের ওল্ড হস্টেলের। আবাসিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন এই সমস্যা চলছে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি। স্বভাবতই ক্ষোভ ছড়িয়েছে আবসিকদের মধ্যে।
কলেজ চত্বরে অবস্থিত প্রাচীন এই দ্বিতল হস্টেলে প্রায় ৫০ জন ছাত্র থাকে। তাঁদের অভিযোগ, প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা করে হস্টেল ফি দেওয়া হয়। অথচ হস্টেলের পরিকাঠামোর উন্নয়নের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। বছর চারেক আগে জল পড়া আটকাতে হস্টেলের ছাদে পিচের চট দেওয়া হয়। সাময়িক ভাবে তাতে জল পড়া আটকানো গেলেও গত বছর থেকেই ফের ছাদের ফুটো দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করেছে। ছাত্রেরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টি হলেই আসবাবপত্র গুটিয়ে নিতে হচ্ছে। ঘরের মেঝে ভিজে যাচ্ছে। ভিজে ঘরেই কোনও রকমে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, “বইপত্র ভিজে যাচ্ছে। এ ভাবে থাকার জন্য পড়াশোনারও অসুবিধা হচ্ছে। ” তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ছাদ মেরামতি করুক কলেজ কর্তৃপক্ষ।
আবাসিকদের দাবি, বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজকে ‘এ’ গ্রেড দিয়েছে ন্যাক। ইউজিসি-র তরফে ‘সেন্টার ফর পোটেন্সিয়াল একসেলেন্স’-র তকমাও পেয়েছে এই কলেজ। এর ফলে কলেজের পরিকাঠামো গড়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ হওয়ার কথা। পাশাপাশি সংখ্যলঘু কলেজ হওয়ায় বাড়তি নানা সরকারি সুযোগ সুবিধাও পাওয়া যায়। তারপরেও কলেজের হস্টেলের এই দশা দেখে স্বভাবতই প্রশ্ন তুলছেন আবাসিক ও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা। যদিও কলেজের টিচার-ইনচার্জ গৌতমবুদ্ধ সুরালের দাবি, “হস্টেলের সমস্যাটির দিকে আমাদের নজর রয়েছে। তবে ছাদ মেরামত করার জন্য প্রচুর টাকার দরকার। ইউজিসিকে বিষয়টি জানাব।” বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কমিটির সদস্য তথা বাঁকুড়া সারদামণি গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ গুপ্তের আক্ষেপ, “শিক্ষাক্ষেত্রে খ্রিস্টান কলেজ আমাদের জেলার মুখ। নানা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরেও এই কলেজের হস্টেলের পরিকাঠামো এত খারাপ হওয়ার কথা নয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”