স্কুলে হাজিরা কম থাকায় চুলের মুঠি ধরে এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে গোলমাল ছড়াল পুরুলিয়া শহরের আয়েষা কাচ্ছি উর্দু উচ্চ বিদ্যালয়ে। সহপাঠীদের সামনে কেন দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে অপমান করে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া হল, এই প্রশ্নের জবাব চেয়ে বুধবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। ছাত্রীর বাবা পুরুলিয়া পুরসভার কর্মী হওয়ায় খবর পেয়ে স্কুলে প্রতিবাদ জানাতে যান পুরসভার বিরোধী দল কংগ্রেসের কিছু নেতা-কর্মীও। সকাল থেকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদে এ দিন স্কুলের পড়াশোনা কার্যত শিকেয় ওঠে। পুলিশও পৌঁছয়।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। ইদগাহ মহল্লায় ওই ছাত্রীর বাড়ি। তার বাবার অভিযোগ, মঙ্গলবার স্কুল থেকে এসে মেয়ে মুখ শুকনো করে বসেছিল। অনেক জিজ্ঞাসার পরে সে জানায়, স্কুলে কম যাওয়ার জন্য এক শিক্ষক মা-বাবার নাম তুলে ওকে অপমান করেন। প্রতিবাদ জানালে ওই শিক্ষক মেয়েকে চুলের মুঠি ধরে বের করে দেন।” এ দিনও ওই ছাত্রীর দাবি, “হাজিরা কিছুটা কম হলেও স্কুলে আমি আসি। কিন্তু শিক্ষক বাবা-মা-র নাম করে অপমান করেন ও চুলের মুঠি ধরে বের করে দেওয়ায় খুব খারাপ লেগেছে।”
ওই ঘটনার রেশ টেনে বাসিন্দারা বিক্ষোভে অভিযোগ তোলেন, স্কুলে শৃঙ্খলা আলগা হয়ে পড়ছে। তার প্রভাব পড়ছে পঠন-পাঠনে। শেখ রাজু বলেন, “স্কুলে শৃঙ্খলা হারিয়ে যাচ্ছে। একজন ছাত্রীকে এ ভাবে সহপাঠীদের সামনে অপমান করে বের করে দেওয়া হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিভাস দাস বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীর গায়ে হাত তোলা কি বিধিসম্মত? প্রয়োজনে ওই ছাত্রীর অভিভাবকে ডেকে পাঠাতে পারত স্কুল কর্তৃপক্ষ। সহপাঠীদের সামনে এ ভাবে গায়ে হাত তোলায় ওই ছাত্রীর আত্মসম্মানে লেগেছে।”
স্কুলের টিচার-ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, “ছাত্রীটির অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ নিয়ে আমি ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলব। স্কুলের পরিচালন সমিতিকেও জানাব।” তৃণমূল পরিচালিত স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক সৈয়দ আহমেদ আনসারি বলেন, “আমিও স্কুলে এসে ওই অভিযোগ শুনলাম। এ নিয়ে অলোচনা করা হবে।”
যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই শিক্ষকের দাবি করেন, “ক্লাসে কম হাজিরা থাকার বিষয়টি নিয়ে আমি ওকে বকাঝকা করেছিলাম। এমনকী ক্লাস থেকে বেরও করে দিই। কিন্তু চুলের মুঠি ধরে বের করিনি বা ওর বাবা-মার কথা তুলেও কিছু বলিনি।” এলাকার উত্তেজিত বাসিন্দাদের সামনে হাতজোড় করেন।