সংগৃহীত চিত্র।
আবহ তখন ‘জন-গন-মন-অধিনায়ক’ গানের, তারই মাঝে আর্তনাদ ‘‘আমি সচ্ছ ভাবে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছি। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের চাকরি দিক! আমরা ভিক্ষা করতে চাই না!’’— মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ’২২ টেট ডিএলএড ঐক্য মঞ্চ থেকে এমনই আর্তনাদ শোনা গেল বিশেষ ভাবে সক্ষম এক প্রার্থীর গলায়।
২০২২-এর ১১ ডিসেম্বর, ক্যানিং-এর সহরজান লস্কর আর পাঁচ জনের মতো শিক্ষক হওয়ার একরাশ স্বপ্ন নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ২০২৩-এ টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (টেট)-এর ফলাফল প্রকাশ হলেও এখনও চাকরি মেলেনি। মঙ্গলবার শিয়ালদহ থেকে রানি রাসমণি রোড পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদেরই মধ্যে হুইল চেয়ারে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন সহরজান। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘‘স্বামী ছেড়ে দিয়েছে শুধু মাত্র চাকরি পাই নি বলে। আমার দেড় বছরের ছোট সন্তানকে নিয়ে কোনও মতে দিন কাটাচ্ছি’’। আয় বলতে লক্ষ্মী ভান্ডার ও বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য প্রাপ্ত সরকারি ভাতা। তাই দিয়ে বৃদ্ধ মা ও ছোট সন্তানকে নিয়ে সংসার চালান সহরজান। এই পরিস্থিতিতেও পড়াশোনা করতে আগ্রহী সে। নেতাজী সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বর্তমানে স্নাতকোত্তর পড়ছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২-এর ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকের টেট-র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষা হয় ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর। যার ফলাফল প্রকাশ হয়েছিল ২০২৩-র ১০ ফেব্রুয়ারি। তার পর থেকে ৬৫৫ দিন অতিক্রান্ত। এখনও পর্যন্ত একজনও চাকরি প্রার্থীর কাউন্সেলিং হয়নি। চাকরিপ্রার্থী পার্থজিৎ বণিক বলেন, ‘‘সেই সময়ের পর্ষদ সভাপতি ৫০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু রেজ়াল্ট থেকে প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনও চাকরি পাননি আন্দোলনরতরা।’’
বিক্ষোভের মধ্যে দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী কাছে আবেদন সহরজান-এর মতো আরও বিশেষ ভাবে সক্ষম চাকরি প্রার্থীর। তাঁদের এখন একটাই বাদি প্রতিশ্রুতি মতন বাকি ৫০ হাজার নিয়োগ যত দ্রুত করা হোক।