চাষির মুশকিল আসান যন্ত্রে

কম সময়ে এবং কম খরচে খেতের ফসল ঘরে তুলতে চাষিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘হারভেস্টার’। ফসল কাটার এই যন্ত্র ইতিমধ্যেই দেশের নানা প্রান্তে, এমনকী এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও জনপ্রিয় হয়েছে। তবে, বীরভূমের খেত-খামারে এই যন্ত্র এখনও ততটা নজরে পড়ে না। যদিও শনিবার দুবরাজপুরের বেলসাড়ায় দেখা মিলল এমনই একটি ‘হারভেস্টার’ যন্ত্রের। ওই মৌজায় থাকা নিজের জমির ধান তোলার জন্য যন্ত্রটি ভাড়া নিয়েছিলেন এক চাষি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
Share:

যন্ত্র দিয়ে চলছে ধান কাটা। দুবরাজপুরের বেলসড়া গ্রামে ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত।

কম সময়ে এবং কম খরচে খেতের ফসল ঘরে তুলতে চাষিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘হারভেস্টার’। ফসল কাটার এই যন্ত্র ইতিমধ্যেই দেশের নানা প্রান্তে, এমনকী এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও জনপ্রিয় হয়েছে। তবে, বীরভূমের খেত-খামারে এই যন্ত্র এখনও ততটা নজরে পড়ে না। যদিও শনিবার দুবরাজপুরের বেলসাড়ায় দেখা মিলল এমনই একটি ‘হারভেস্টার’ যন্ত্রের। ওই মৌজায় থাকা নিজের জমির ধান তোলার জন্য যন্ত্রটি ভাড়া নিয়েছিলেন এক চাষি। ধান কাটা থেকে ঝাড়াই— সব ক’টি পর্ব নিমেষেই মিটে যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত ওই চাষি চণ্ডীচরণ ঘোষ দাবি করলেন, “এখন চাষের কাজে শ্রমিকের খুব অভাব। সেখানে লোক লাগিয়ে এ কাজ করার তুলনায় এই যন্ত্র লাগালে সময় এবং খরচ দুই-ই বাঁচে।” তিনি জানান, তাঁর সাড়ে তিন বিঘা জমির ধান কেটে ঝাড়াই পর্ব শেষ করতে কেবল ঘণ্টা খানেক সময় লেগেছে। খরচ পড়ে ৩,৩০০ টাকা। অর্থাৎ বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে হাজার টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে ধান বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার খরচ। যেখানে এক বিঘা জমির ধান কেটে বাড়ি নিয়ে গিয়ে সেই কাজ করতে প্রায় ২০০০-২২০০ টাকা খরচ পড়ে যায়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, খয়রাশোলের এক ব্যক্তি উত্তর দিনাজপুর থেকে ওই যন্ত্র ঠিকায় নিয়ে এসেছেন। সেটি এলাকার চাষিদের ভাড়া দিয়ে যথেষ্ট সাড়াও পেয়েছেন। তবে, ওই যন্ত্র ব্যবহারের কিছু সমস্যাও রয়েছে। প্রথমত, ছোট বা বেশি আলযুক্ত জমির ফসল কাটার জন্য ওই যন্ত্র উপযুক্ত নয়। দ্বিতীয়ত, ফসল কাটার সময় চাষি ঠিক মতো খড় পাবেন না। তবে, গবাদি পশু খাওয়ার হিসাবে তা ব্যবহার করা যায়। কিন্তু, ঘর ছাওয়ার জন্য বা বিক্রি করার জন্য যে মানের ও মাপের খড় প্রয়োজন, তা মেলে না। এ দিকে, জেলা কৃষি দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, মাত্র ১৭ মিনিট সময় পেলেই একটি ‘হারভেস্টার’ এক বিঘা জমির ধান বা গম কেটে ঝাড়াই করে সেই ফসল চাষির হাতে তুলে দিতে পারে। এমনিতে, জমির ফসল কাটা, সেই ফসলের আঁটি তৈরি করা, বাড়িতে নিয়ে যাওয়া, ঝাড়াই করা— সব মিলিয়ে যথেষ্ট সংখ্যক শ্রমিক প্রয়োজন। এই যন্ত্র ব্যবহার করলে চাষির সময় ও ব্যয় দুটোই কমে। আর খড় না পাওয়ার প্রসঙ্গে জেলার এক কৃষি আধিকারিকের বক্তব্য, “ফসল কাটার সময় যে পরিমাণ খড় জমিতে পড়ছে, সেই খড় জমিতে থাকাকালীনই জমি চষে দিলে, তা জৈব সারের কাজ করবে।” তিনি আরও জানান, ‘আত্মা’ প্রকল্পের আওতায় একগুচ্ছ ইচ্ছুক চাষি বেছে নিয়ে একত্রিত ভাবে ওই যন্ত্র কিনতে সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। এর ফলে ওই চাষিরা যেমন নিজেদের জমির ফসল ঘরে তুলতে পারবেন, তেমনই এলাকার অন্য চাষিদেরও প্রয়োজনে ‘হারভেস্টার’ ভাড়া দিয়ে আয় করতে পারবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement