গামছা পরে পাঁচিল টপকে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে চম্পট দিল আসামি

সম্বল বলতে এক টুকরো গামছা। আর তার পরেই রাতের অন্ধকারে ফাঁড়ির পাঁচিল টপকে পালাল পুলিশি হেফাজতে থাকা এক আসামি! বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তারাপীঠ ফাঁড়ির ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক আসামির নাম অর্জুন শর্মা। বাড়ি ধানবাদের গোবিন্দপুর থানা এলাকায়। শুক্রবার রাত অবধি পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি। জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “এমন ঘটনা কেন ঘটল, ডিউটিতে কারও কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০০:১৬
Share:

শৌচাগারের পাশের এই দেওয়াল টপকেই পালিয়েছে আসামি।

সম্বল বলতে এক টুকরো গামছা। আর তার পরেই রাতের অন্ধকারে ফাঁড়ির পাঁচিল টপকে পালাল পুলিশি হেফাজতে থাকা এক আসামি!

Advertisement

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তারাপীঠ ফাঁড়ির ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক আসামির নাম অর্জুন শর্মা। বাড়ি ধানবাদের গোবিন্দপুর থানা এলাকায়। শুক্রবার রাত অবধি পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি। জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “এমন ঘটনা কেন ঘটল, ডিউটিতে কারও কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। তারাপীঠ ফাঁড়ির পরিকাঠামোগত কোনও ত্রুটি রয়েছে, কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” গোটা ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠলেও এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে শো-কজ করেনি পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, তারাপীঠ এলাকার একটি গাড়ি চুরির ঘটনায় গত রবিবার মাড়গ্রাম থানার পুলিশ বছর পঁচিশের ওই যুবককে নলহাটির আকালিপুর থেকে গ্রেফতার করেছিল। রামপুরহাট আদালত ধৃতকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছিল। তার সূত্রেই বুধবার ওই যুবককে তারাপীঠ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেখানে অবশ্য এক দিন হাজতে কাটিয়েই পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালায় অর্জুন। জানা গিয়েছে, ওই ফাঁড়ির হাজতের ভিতরে কোনও শৌচাগার নেই। বৃহস্পতিবার রাত ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ অর্জুুন পুলিশের কাছে শৌচাগারে যাওয়ার অনুমতি চায়। ফাঁড়ির দেওয়াল লাগায়ো একটি শৌচাগারে আসামিদের নিয়ে আসা হয়। সে ক্ষেত্রে এক জন সেন্ট্রি এবং দু’জন কনস্টেবল আসামির সঙ্গে থাকার কথা। কিন্তু অভিযোগ, সেন্ট্রির দায়িত্বে থাকা এক এনভিএফ কর্মী একাই অর্জুনকে শৌচাগারে নিয়ে যায়। জামাকাপড় খুলে কেবল একটি গামছা পড়েই অর্জুন শৌচাগারে ঢুকে পড়েছিল। ওই অবস্থাতেই সে এনভিএফ কর্মীরহ অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে শৌচাগার লাগোয়া পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। লাফ দেওয়ার শব্দ পেয়েই ওই এনভিএফ কর্মীর টনক নড়ে। আসামি পালানোর খবরে চারিদিকে শোরগোল পড়ে যায়।

Advertisement

ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া গাড়ি।

শুক্রবার তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টুবাই ভৌমিক বলেন, “রাত দু’টো নাগাদ ফাঁড়ির কোয়ার্টারে ঢোকা মাত্র খবর পাই পুলিশ হেফাজতে থাকা এক আসামি পালিয়েছে। চারিদিকে খোঁজ শুরু করি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অর্জুন শর্মার খোঁজ মেলেনি।” এ দিকে, ঘটনা হল, বৃহস্পতিবার রাত ১টা পর্যন্ত তারাপীঠ এলাকায় কার্যত পুলিশি নিরাপত্তায় মোড়া ছিল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় তারাপীঠে পুজো দিতে এসেছিলেন। তার সূত্রে দুপুর থেকেই এলাকায় প্রচুর পুলিশ ফোর্স ছিল। রামপুরহাট-সাঁইথিয়া রাস্তার উপর মনসুবা মোড় থেকে তারাপীঠ মন্দির যাওয়ার পথ পর্যন্ত ছিল বেনজির নিরাপত্তায় মোড়া। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাত শোয়া ১টা নাগাদ নেতা ফিরতেই এলাকার পুলিশি নিরাপত্তা আবার আগের মতো শিথিল হয়ে পড়ে। তারই সুযোগ নিয়েই ওই আসামি পালায় বলে অভিযোগ।

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement