সারদা ফুটবল ময়দানে চলছে মাপামাপি। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত
একটি কাগজের সঙ্গে আর একটি কাগজ পলকে জুড়ে দেওয়ার কাজটা নাগাড়ে করে স্টেপল পিন। সামান্য অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান স্টেপলার ও স্টেপল পিনের অবশ্যক উপস্থিতি সরকারি অফিস কাছারি, স্কুল-কলেজ, পড়ুয়াদের ব্যাগ সর্বত্রই। সেই স্টেপল পিন এ বার গিনেস বুকে নাম তোলার চেষ্টার উপাদানও হল।
স্টেপল পিন আঙুলে বাঁকিয়ে তা দিয়ে দীর্ঘতম চেন তৈরি করে নিজের নাম ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড’ রেকর্ডে তুলতে চান দুবরাজপুরের তরুণ মিনহাজুল মণ্ডল। ভূগোল অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ওই তরুণ যে সত্যিই ‘লংগেস্ট স্টেপল চেন’ তৈরি করেছেন, সেটা প্রশাসনিক নজরদারিতে সোমবার সেটা প্রমাণ হয়েছে। এখন গিনেসের স্বীকৃতির অপেক্ষা।
১৮১৯ ফুট ৭.৩২ ইঞ্চির ‘লংগেস্ট স্টেপল চেন’ গড়ে এখনও পর্যন্ত এই রেকর্ডের অধিকারী এ রাজ্যেরই এক যুবক। অনুপম সরকার নামে ওই যুবকের বাড়ি নদিয়ার শান্তিপুরে। ২০১৮ সালের ১ জুলাই তিনি রেকর্ড গড়েন। দুবরাজপুরের যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সালুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা মিনহাজুল মণ্ডল সোমবার সেই রেকর্ড নিজের নামে করার দিকে অনেকখানি এগিয়ে গেলেন। এ দিন দুবরাজপুর ব্লকের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় এবং যুগ্ম বিডিও কল্লোল দাসের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের তরফে পাঠানো দুই সার্ভেয়ার মিনহাজুলের তৈরি স্টেপল চেন-এর যা মাপ পেয়েছেন সেটা ২১৭০ ফুট ১০ ইঞ্চি।
দেখুন ভিডিয়ো:
এখনও স্বীকৃতি না এলেও যে পরিশ্রম ও অধ্যাবসায় দিয়ে ওই তরুণ এ কাজ করেছেন সেটা সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিডিও বলছেন, ‘‘গিনেসে নাম তোলা মানে তো পৃথিবী সেরার রেকর্ড। সেটা যদি মিনহাজুলের মতো আমাদের জেলা, ব্লকের কেউ পায় সেটা সব সময়েরই গর্বের। এতে অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে।’’ মিনহাজুল পঞ্চম শ্রেণির পর থেকে পশ্চিম বর্ধমানের লাউদোহা থানা এলাকার ইছাপুরে মামারবাড়িতে মানুষ হচ্ছেন। প্রথমে ওখানকার এনসি উচ্চ বিদ্যালয়ে, এখন রানিগঞ্জ কলেজে পড়াশোনা করেছেন। পড়ার ফাঁকে রাত জেগে ৮২ দিনে ২১১ ফুটের বেশি লম্বা চেন তৈরি করে ফেলেছেন। উদ্দেশ্য গিনেসে নিজের নাম তোলা। বাবা শেখ ফজরুল হক বলছেন, ‘‘ছোট থেকেই নানা ধরণের মডেল তৈরি করত। সব সময় চাইত অন্য রকম কিছু করার।’’ এ দিন দুবরাজপুরে উপস্থিত ছিলেন ওই তরুণের স্কুলের শিক্ষিকা সোমা মুখোপাধ্যায়, গৃহশিক্ষক বুদ্ধদেব লৌর মতো কাছের মানুষরা। তাঁরাও একই কথা জানান।
ওই তরুণ বলছেন, ‘‘বেশ কয়েক মাস আগেই গিনেসে অ্যাকাউন্ট করে লক্ষ্যস্থির করে ফেলেছিলাম। কী ভাবে এগোতে হবে সেটা জানতে মাসখানেক আগে দুবরাজপুর এলে ব্লক প্রশাসন পথ দেখায়।’’ যুগ্ম বিডিও কল্লোল দাস বলছেন, ‘‘ওই তরুণ যখন আমাদের কাছে আসে, তখন জেলাশাসকের কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জেলা যুব আধিকারিকের কাছ থেকে আসা চিঠিতে নিয়মটা জানতে পারি। তার পরে মিনহাজুলকে জেলাশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। নিয়ম হচ্ছে, দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ও সার্টিফায়েড সার্ভেয়াররাই মাপতে পারবেন। পুরো বিষয়টার অবিচ্ছিন্ন ভিডিও ক্লিপও থাকবে। সেটাই পাঠানো হবে গিনেসে। সিদ্ধান্ত তার পরে। সেই কাজই সোমবার হল।’’