সমবেত: রথীন্দ্র কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে কৃষকদের কর্মশালা। নিজস্ব চিত্র
কৃষিক্ষেত্রে চাষের জমিতে সারের উপযুক্ত ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের আরও সচেতন করতে ভারত সরকারের কৃষি মন্ত্রকের নির্দেশে বীরভূম জেলার কৃষকদের নিয়ে মঙ্গলবার একটি সচেতনতামূলক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল বিশ্বভারতীর রথীন্দ্র কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। কেন্দ্রের কৃষি ও কৃষি কল্যাণ মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার দিল্লি থেকে এ দিন এই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। সরাসরি সেই অনুষ্ঠানটি রথীন্দ্র কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে সম্প্রচার করা হয়।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক নিখিলেশ চৌধুরী, বীরভূম জেলার কৃষি অধিকর্তা ডঃ এ কে এম মিনাজুর আহসান, পল্লী শিক্ষাভবনের অধ্যক্ষ দেবাশিস ভট্টাচার্য, অধ্যাপক জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মৃত্তিকা বিজ্ঞানী গৌতমকুমার ঘোষ-সহ উপস্থিত ছিলেন অন্যান্যরা। এ দিনের অনুষ্ঠানে বীরভূমের বিভিন্ন ব্লক থেকে ২০০ জন কৃষক অংশগ্রহণ করেছিলেন।
জানা গিয়েছে, এই সচেতনতা শিবিরের মূল উদ্দেশ্য হল, বর্তমানে কোনও রকম চিন্তাভাবনা না করে কৃষি জমিতে যথেষ্টভাবে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে মাটি, পরিবেশ এবং কৃষির স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে খরচ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে এর সঙ্গে সঙ্গে কৃষকদের আয় ও কমে যাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কম খরচে সঠিকভাবে জৈব রাসায়নিক সার ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। যাতে কৃষকেরা অল্প খরচে কৃষি জমিতে অল্প সার ব্যবহার করে অধিক পরিমাণে ফসল ফলাতে পারে এবং আয় বৃদ্ধি করতে পারে, সেই উদ্দেশ্য নিয়েই এই কর্মশালা করা হয়। এ দিনের কর্মশালা থেকেই কৃষকদের কী ভাবে কৃষি জমিতে অল্প সার দিয়ে চাষ করতে হবে তা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়, এর সঙ্গে কৃষিজমিতে জৈব রাসায়নিক সার কী ভাবে ব্যবহার করতে হবে তা একটি লিফলেট আকারেও কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এছাড়াও সব কৃষকদের এ দিন আবর্জনা পচনশীল দ্রবণ বিতরণ করা হয় যাতে কৃষকেরা নিজেরাই তা থেকে সহজেই জৈব সার তৈরি করে চাষের কাজে ব্যবহার করতে পারেন। মাটিতে সার প্রয়োগের কৌশল নিয়েও কৃষকদের প্রশিক্ষম দেওয়া হয়
। দুবরাজপুর ব্লকের কৃষক জীবনকুমার মণ্ডল, সাঁইথিয়ার কৃষক শুভাশিস ঘোষরা বলেন, ‘‘এতদিন ধরে চাষ করে আসছি কিন্তু বেশি সার প্রয়োগের ফলে মাটির ক্ষতি হয় তা জানতাম না। আজকের এই কর্মশালা থেকে অনেক কিছু শিখলাম। আগামী দিনে নিয়ম মেনেই চাষের কাজে সারের ব্যবহার করব জমিতে।’’
বিশ্বভারতী রথীন্দ্র কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানী সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য রাসায়নিক সার অত্যধিক পরিমাণে ব্যবহারের ফলে মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেটা যাতে কমানো যায় এবং অল্প খরচে সঠিক সার প্রয়োগ করে অধিক মাত্রায় ফসল ফলানো যায় সেই লক্ষ্য নিয়েই আজকে আমাদের এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে বিভিন্ন গ্রামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হবে।’’