Coronavirus

নজরে তিন রাজ্যের শ্রমিক

লকডাউন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বাইরের রাজ্যে আটকে থাকার পরে পরিযায়ী শ্রমিকেরা এ বার জেলায় ঢুকছেন।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৩:২৮
Share:

ছবি এএফপি।

জেলায় করোনা-আক্রান্ত রোগী অল্প হলেও বাড়ছে। এই অবস্থায় মহারাষ্ট্র, গুজরাত এবং দিল্লি থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে চিন্তায় আছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর এই তিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের সরকারি গাইড লাইন অনুযায়ী সরকারি নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করছে। তবে, সমস্যা হল, এই মুহূর্তে ওই তিন রাজ্যে জেলার কত জন শ্রমিক কাজ করেন, সেই তথ্য প্রশাসনের জানা নেই।

Advertisement

ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা ‘বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ’-এর রাজ্য সভাপতি সামিউল ইসলাম জানান, বীরভূম-সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলার কত সংখ্যাক শ্রমিক রাজ্যের বাইরে কাজ করেন, সে সম্বন্ধে সঠিক তথ্য প্রশাসনের কাছে নেই। সুতরাং কত জন শ্রমিক এখনও বাইরে থেকে আসছেন, তার তথ্যও প্রশাসনের জানা নেই। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ অমিতাভ সাহা বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র, গুজরাত এবং দিল্লি থেকে যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক আসছেন, তাঁরাই এখন আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ।’’ তিনি জানান, বীরভূম স্বাস্থ্যজেলায় ইতিমধ্যেই গুজরাত থেকে আসা এক জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। ওই তিন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের সর্বাগ্রে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

লকডাউন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বাইরের রাজ্যে আটকে থাকার পরে পরিযায়ী শ্রমিকেরা এ বার জেলায় ঢুকছেন। জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত ছয় থেকে সাত হাজার পরিযায়ী শ্রমিক জেলার বিভিন্ন ব্লকে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের গৃহ-নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হলেও তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না বলে বিভিন্ন এলাকারা বাসিন্দারা অভিযোগ করতে শুরু করেছেন। আবার সরকারি নিভৃতবাসে ঠাঁই নেওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের টেস্ট করার পরে রিপোর্ট না আসার আগে নিভৃতবাস থেকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠছে। দিন তিনেক আগেই রামপুরহাট থানার চাঁদের জোল গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, গ্রামের দু’জন শ্রমিক মহারাষ্ট্র থেকে ফিরলেও তাঁদের সরকারি নিভৃতবাসে রাখা হয়নি। খবর পেয়ে রামপুরহাট ১ ব্লক প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতর গ্রামবাসীদের ওই দু’জনকে নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করেন।

Advertisement

একই ভাবে নলহাটি থানার লোহাপুর গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, সোমবার ও মঙ্গলবার মুম্বই এবং পুণে থেকে আসা লোহাপুর, কাঁটাগড়িয়া, হাজারপুর এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ জন শ্রমিকের এখনও পর্যন্ত কোনও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা সরকারি নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করা হয়নি। এলাকার বাসিন্দারা মহকুমাশাসককে (রামপুরহাট) মেল করে বিষয়টি জানিয়েছেন।

মহকুমাশাসক শ্বেতা আগরওয়াল যদিও বলছেন, ‘‘প্রত্যেক পরিযায়ী শ্রমিকের পরীক্ষা করাতেই হবে, এমন কোনও সরকারি নির্দেশ নেই। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের ১০০ শতাংশ লালারস সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। সেটা আমরা কার্যকর করার চেষ্টা করছি।’’ তিনি জানান, পরীক্ষাগারে টেস্ট হচ্ছে, সেখানে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার জন্য ২০০ জনের লালারস সংগ্রহ করে প্রতিদিন পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু, প্রায় প্রতিদিনই পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় আসছেন। সেখানে সরকার নির্ধারিত গাইডলাইন অনুযায়ী জেলা প্রশাসনকে কাজ করতে হচ্ছে। অমিতাভাবাবুও বলছেন, ‘‘পরীক্ষা জরুরি ভিত্তিতে করতে পারলে ভালই হয়। কিন্তু, সকলের নমুনা সংগ্রহ করার পরে সেগুলি এক সঙ্গে পরীক্ষায় পাঠানো সমস্যা আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement