সিউড়ি আদালতে কর্মবিরতিতে কর্মীরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
বকেয়া মহার্ঘভাতা এবং সমস্ত সরকারি পদে স্বচ্ছ ও স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে আবারও কর্মবিরতির পথে হাঁটল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। বৃহস্পতিবার রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি, আদালত কর্মচারী সমিতি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠন-সহ ৬২ সংগঠন মিলিত ভাবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ছাতার তলায় এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল। তবে, এ দিন বীরভূম জেলায় আদালত ছাড়া অন্যত্র কর্মবিরতির তেমন কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি।
যদিও কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, কার্যালয়ে উপস্থিতির পরিমাণ দেখে অথবা হাজিরা খাতা দেখে কর্মবিরতির প্রভাব হিসাব করা ঠিক হবে না। কারণ কর্মীরা কার্যালয়ে আসছেন, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন, ছুটির সময়ও খাতায় স্বাক্ষর করছেন, কিন্তু কাজে যোগ দিচ্ছেন না। কমিটির জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, “কর্মবিরতি সর্বাত্মক ভাবে সফল হয়েছে। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও কর্মীরা কেউ কাজে যোগ দেননি।” যদিও জেলা প্রশাসন ভবন, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর সহ জেলা সদরের প্রধান সরকারি দফতরগুলিতে এ দিন পুরোদমেই কাজ হয়েছে বলে দাবি করছেন কর্মীদেরই একাংশ।
গত ১ এপ্রিল থেকে আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ষষ্ঠ দফার ‘দুয়ারে সরকার’ আয়োজিত হচ্ছে প্রত্যেকটি বুথে। দ্রুত বকেয়া কাজ মেটাতে চাইছে প্রশাসনও। ফলে সরকারি দফতরগুলিতে বর্তমানে প্রচণ্ড কাজের চাপ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন কর্মীরা। তাঁদের মতে, যেহেতু শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন ছুটি, তাই বৃহস্পতিবার কর্মবিরতির পথে হাঁটলে ‘দুয়ারে সরকার’-এর বকেয়া কাজ মেটানো কঠিন হয়ে যেত। অন্য দিকে, কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, দুয়ারে সরকারকে অত্যাবশ্যকের তালিকায় রেখে তাকে কর্মবিরতির আওতার বাইরেই রাখা হয়েছে।
তবে গত কয়েকটি কর্মবিরতির মতোই এ দিনও জেলার আদালতের কর্মচারীরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন। সিউড়ি জেলা আদালতে এ দিন এগারোটা নাগাদ সমস্ত কর্মী একত্রিত হয়ে স্লোগান ও পোস্টারের মাধ্যমে চাকরির দাবিতে বাইরে জমায়েত হন। এর পরে সারাদিনের জন্য তাঁরা কর্মবিরতি ঘোষণার পাশাপাশি দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। একই ছবি দেখা গেছে রামপুরহাট, বোলপুর ও দুবরাজপুর আদালতে। আদালত কর্মচারী সমিতির রাজ্য সম্পাদক সুবোধ চন্দ্র পালের দাবি, “রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। পাশাপাশি আমাদের বিরোধ প্রদর্শনের উপরেও বেআইনি বিধি নিষেধ আরোপ করছে। আমরা কোনও ভাবেই সরকারি ফতোয়া মানছি না। আমাদের দাবিগুলি মেনে না-নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের গতি বাড়বে।’’