উলটপুরান: নলহাটির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়াল-লিখন। বুধবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
কথায় আছে, পতির পুণ্যে, সতীর পুণ্য। বাস্তবেও কি নেই?
পুরসভার ৭ নম্বর এ বার মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ড। সেই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলর নির্মল মণ্ডলের স্ত্রী প্রণতি মণ্ডল। ওয়ার্ড ঘুরে কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু দেওয়ালে প্রার্থীর বকলমে তৃণমূলের ঘাষফুল প্রতীকের পাশে ‘নির্মলবাবুকে ভোট দিন’ বলে প্রচার করা হয়েছে। সেই প্রচার দেখে অনেকেরই মনে এসেছে আপ্তবাক্যটির কথা। ছড়া কেটে কেউ কেউ বলছেন, ‘‘পতির পুণ্যে সতীর পূণ্য। নইলে খরচ বাড়ে।”
পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে প্রশাসন, মেয়েদের যোগদান বাড়াতে আইন সংশোধন থেকে মহিলা বিল পাশ— কম চেষ্টা করা হয়নি। পরিস্থিতি একটু একটু করে পাল্টালেও বাস্তবে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মহিলা প্রার্থীর স্বামী-আত্মীয়েরাই বকলমে জনপ্রতিনিধির পদ সামলাচ্ছেন। সেই ঘটনা আবারও সামনে এনে দিয়েছে নলহাটি।
২০০৭ সালে নলহাটির দ্বিতীয় পুরভোটে সিপিআইয়ের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন নির্মল মণ্ডল। ২০০২ সালে, প্রথম পুরভোটে ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস কাউন্সিলর দুর্বা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১৩ ভোটে হারিয়েছিলেন নির্মলবাবু। বছর ঘুরতেই ২০০৯ সালের নভেম্বরে তিনি তৎকালীন পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝার অনুগামী হয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ২০১২ সালে তৃণমূলের হয়ে ১৬৫ ভোটে জয়ী হন। লোকসভা, বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল ওই ওয়ার্ড থেকে লিড পেয়েছে। ফের মেলে টিকিট। কিন্তু, সংরক্ষণের গেরোয় প্রার্থী হতে পারেননি তিনি। দাঁড়ান স্ত্রী। তাঁর হয়েই প্রচার করছেন বিদায়ী এই কাউন্সিলর।
কোথাও ‘ভুল’ হয়ে গিয়েছে, বুঝেছেন নির্মলবাবু। বলছেন, ‘‘ওটা পুরনো দেওয়াল লিখন হয়ে থাকতে পারে। হয়তো চুনকাম করতে সমস্যা হয়েছে। তাই দেওয়ালে আমার নামই রয়ে গিয়েছে।’’ নলহাটির নেতা মইনুদ্দিন শামসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেউ বদমায়সি করে করেনি তো? আমি দেখে নিচ্ছি।’’