‘ওয়াই-ফাই’ সিটি হবে বোলপুর, খুশি পুরবাসী

কলকাতার পার্কস্ট্রিটের পরে বোলপুর। এ বার এই শহরেও ‘ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন’ চালু করতে চলেছে একটি বেসরকারি মোবাইল পরিষেবা সংস্থা। সেই সঙ্গে বোলপুরে অত্যাধুনিক ইন্টারনেট পরিষেবা ৪-জি চালু করার ব্যাপারেও ওই সংস্থা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

মহেন্দ্র জেনা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০১:১৫
Share:

এলাকায় বসছে এ রকমই ২২টি টাওয়ার। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতার পার্কস্ট্রিটের পরে বোলপুর। এ বার এই শহরেও ‘ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন’ চালু করতে চলেছে একটি বেসরকারি মোবাইল পরিষেবা সংস্থা। সেই সঙ্গে বোলপুরে অত্যাধুনিক ইন্টারনেট পরিষেবা ৪-জি চালু করার ব্যাপারেও ওই সংস্থা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে মোবাইল পরিষেবা সংস্থা রিলায়েন্স এই পরিষেবা দেবে। বাসিন্দারা শহরের এবং আশপাশের এলাকাতে ওই ৪-জি ওয়াই-ফাই পরিষেবা পাবেন।” কয়েকটি নির্দিষ্ট পয়েন্টেই আপাতত বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই পরিষেবা দেবে ওই সংস্থা। তাঁর দাবি, কী শহর, কী গ্রাম— নাগরিকদের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিতে রাজ্যের তৃণমূল সরকার বদ্ধ পরিকর। তথ্য ও প্রযুক্তির এই আধুনিক যুগে বসবাসকারী নাগরিকদের ওই পরিষেবা হাতের নাগালে পাইয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীই এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

ঘটনা হল, গত কয়েক দিন ধরেই শহরজুড়ে ‘অপটিকাল ফাইবার’ বসানোর কাজ জোরকদমে চালাচ্ছে তারা। শুধু শহরের ২০টি ওয়ার্ডই নয়, আশপাশের এলাকাতেও থাকছে বেশ কিছু টাওয়ার। সব মিলিয়ে বসছে ২২টি টাওয়ার। ওই টাওয়ারগুলির মাধ্যমেই ‘৪-জি ওয়াই-ফাই’ পরিষেবা মিলবে বলে জানা গিয়েছে। সংস্থার পক্ষে সিটি কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার সৌরভকুমার সিংহ বলছেন, “বোলপুর পুরসভা, তার আশপাশে এবং বিশ্বভারতী এলাকাও রয়েছে ওই সব টাওয়ারের সীমায়। সমস্ত জায়গাতেই সুষ্ঠু ভাবে পরিষেবা মিলবে। অপটিক্যাল ফাইবার বসানোর কাজ প্রায় শেষ।” আপাতত একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বোলপুর রেল স্টেশন, শান্তিনিকেতনের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এবং পড়ুয়াদের হস্টেলে বিনামূল্যে ওই পরিষেবা দেওয়া হবে। শহরের যুব প্রজন্মের মুখে হাসি ফুটিয়েছে নতুন ওয়াই-ফাই-এর এই খবর। বিশ্বভারতীর স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বিষ্ণু ঘোষ এবং হাসান আনসার বলছেন, ‘‘লাইব্রেরিতে, হস্টেলে ফ্রিতে ওয়াই-ফাই পেলে পড়াশোনার জন্য খুবই সুবিধা হবে। কবে ওই পরিষেবা পুরোপুরি চালু হবে, আমরা তার দিকে তাকিয়ে আছি!’’

Advertisement

সংস্থার বোলপুর কেন্দ্রের ম্যানেজার নীতিশ কুমার বলেন, “ওই সব এলাকায় ইতিমধ্যেই আমরা ‘৪-জি ওয়াই-ফাই’ পরিষেবা চালু করে দেখেছি। আপাতত বোলপুর এবং তার আশপাশের এলাকায় এই পরিষেবা চালু হচ্ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মধ্যেই ওই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে।’’ পাশাপাশি বোলপুর মহকুমার চারশোরও বেশি গ্রামে ওই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সংস্থা। এ দিকে, সংস্থা সূত্রেরই খবর, কিছু এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে বিনামূল্যে ওই পরিষেবা দিলেও আগামী দিনে বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল, মহকুমা পুলিশ ও প্রশাসনিক ভবন, বোলপুর থানা এবং পুরসভাতেও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনামূল্যে ‘৪-জি ওয়াই-ফাই’ পরিষেবা দেবে ওই সংস্থা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, পর্যটন মানচিত্রে এগিয়ে থাকলেও বিভিন্ন পরিষেবার দিক থেকে ক্রমে পিছিয়ে পড়া বৃহত্তর বোলপুর-শান্তিনিকেতন-প্রান্তিক এলাকাকে ‘স্মার্ট’ করার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে রাজ্য সরকারি। শিল্প গড়তে না পারলেও তাই বোলপুর পুরসভার উপকণ্ঠে শিবপুর মৌজায় ইতিপূর্বেই অত্যাধুনিক টাউনশিপ ‘গীতবিতান’ গড়ার কথা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে কথা ঘোষণা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দিন কয়েক আগেই এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব দেবাসিশ সেন। স্মার্ট-সিটি ‘গীতবিতানে’ও ওই পরিষেবা চালু হওয়ার কথা। বোলপুরে সংস্থাকে ওই পরিষেবা দেওয়ার মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ এই ‘আধুনিকীকরণে’রই একটি অঙ্গ বলে মনে করা হচ্ছে।

বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত বলেন, “ওই সংস্থা এবং রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরেই পুরবাসী এই পরিষেবা উপভোগ করবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement