Cheese

চিজ়ের ভাল-মন্দ

কোন চিজ় খাবেন আর কোনটা নয়, জেনে নিন।

Advertisement

সুনীতা কোলে

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

এককালে ভারতীয় রান্নায় চিজ়ের ব্যবহার ছিল সীমিত। বর্তমানে ছবিটা বদলে গিয়েছে অনেকটাই। স্যান্ডউইচ, পাস্তা, পিৎজ়া, স্যালাড তো বটেই, দোসা বা পরোটার মতো খাবারেও এখন চিজ়ের স্বাদু উপস্থিতি চোখে পড়ে। দুগ্ধজাত এই খাদ্যটির পুষ্টিগুণও ফেলনা নয়। তবে চিজ় খেয়ে ওজন বাড়ার ভয়ও পান অনেকে। কিন্তু চিজ় খেলে কি সত্যিই ওজন বাড়ে? ওজন বাড়ার ভয় দূরে সরিয়েই কি রোজকার ডায়েটের অঙ্গ হতে পারে চিজ়?

Advertisement

চিজ়ের রকমফের

বিশ্ব জুড়ে বহু দেশে নানা ধরনের চিজ় তৈরির রেওয়াজ রয়েছে। কোন দুধ থেকে এবং কী ভাবে তা বানানো হচ্ছে, তার উপরে নির্ভর করে চিজ়ের স্বাদ, গন্ধ, রং। ভারতীয় পনিরও এক রকম চিজ়। আবার ইউরোপে প্রচলিত চিজ়ের মধ্যে রয়েছে মোজ়ারেলা, রিকোত্তা, ফেটা, হালুমি, ব্রি, মাসকারপোনে, চেডার, গুডাহ, এডাম, পারমেসান, ব্লু চিজ় ইত্যাদি।

Advertisement

কেন চিজ় খাবেন?

পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরী জানাচ্ছেন, প্রথাগত উপায়ে তৈরি চিজ় অবশ্যই থাকতে পারে ডায়েটে। দুধ থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় দই তৈরি করে, জল বাদ দিয়ে, নুন দিয়ে, প্রেসিং ও কিয়োর করে যে চিজ় তৈরি হয়, তা শরীরের জন্য উপকারী। দুধ থেকে তৈরি হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে চিজ়ে। এ ছাড়া প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, জ়িঙ্ক, ফসফরাস, পটাশিয়ামও মেলে অনেকটাই।

পরিমাণে নজর

পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, চিজ়ে বেশি পরিমাণে থাকে ফ্যাট। তার মধ্যেও সিংহভাগ আবার স্যাচুরেটেড ফ্যাট। তাই চিজ় থেকে পাওয়া ক্যালরির মাত্রাও বেশি। যে কারণে ডায়েটে চিজ় রাখলে তার পরিমাণ হবে পরিমিত। না হলেই থাকবে ওজন বাড়ার ভয়। ল্যাক্টোজ় ইনটলারেন্স থাকলে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত দুগ্ধজাত জিনিস খেতে পারেন। মনে রাখতে হবে, দুধ, দই, ছানা, চিজ় সব মিলিয়ে এই পরিমাণটা হবে। কোয়েল বললেন, ‘‘ডায়েটে দুগ্ধজাত জিনিসের জন্য শুধু চিজ়ের উপরে জোর না দেওয়াই ভাল। বরং দুগ্ধজাত স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে টক দইয়ের বিকল্প নেই।’’ বাজারচলতি প্রসেসড চিজ় নিয়েও সতর্ক করলেন কোয়েল। এর স্বাদ ভাল হলেও তা স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ এতে চিজ়ের সঙ্গে মেশানো থাকে ভেজিটেবল অয়েল, নুন, চিনি, ফুড কালার, দুধ থেকে তৈরি নয় এমন জিনিসও। ফলে পুষ্টিগুণ কম আর নুনের পরিমাণ খুব বেশি থাকে।

কোন চিজ় বেশি স্বাস্থ্যকর

দুধ বা দইয়ে যতটা পরিমাণ প্রোটিন থাকে, তার থেকে কিছুটা কম প্রোটিন মেলে চিজ়ে। কারণ তৈরির সময়ে প্রেসিং পর্যায়ে জল বার করে দেওয়ায় প্রোটিনও বেরিয়ে যায় বেশ কিছুটা। তবে চেডার, পারমেসান, ফেটা, মোজ়ারেলা, পনির, এডাম— এই সব চিজ়েই প্রোটিনের পরিমাণ বেশ ভাল। শক্ত চিজ় (এডাম, চেডার, পারমেসান, গুডাহ) থেকে ক্যালশিয়াম পাওয়া যায় বেশি। আবার নরম চিজ়ে (ফেটা, মোজ়ারেলা, হালুমি, রিকোত্তা) ক্যালরি ও নুনের পরিমাণ শক্ত চিজ়ের থেকে কম থাকে। তাই এগুলি বেশি স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। স্যালাডে এই ধরনের চিজ়ের ব্যবহার বেশি।

আবার লো ল্যাকটোজ় চিজ় হিসেবে বেছে নিতে পারেন পারমেসান বা চেডার।

কারা খাবেন না

ল্যাকটোজ় ইনটলারেন্স থাকলে তাঁদের চিজ় খাওয়া উচিত নয়। এটি দুধের কনসেনট্রেটেড একটি রূপ হওয়ায় খাওয়ার পরে প্রতিক্রিয়াও বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকায় হৃদ্‌রোগীদের ক্ষেত্রেও উপযুক্ত নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement