বরাবাজারে। নিজস্ব চিত্র
‘মাস্ক’ পরেননি বলে পাড়ার চেনা দোকানদারও তাঁকে ফিরিয়ে দেবেন, ভাবেননি অমিতবাবু। পরে মুখ ঢেকে ওই দোকান থেকেই মিষ্টি কিনে নিয়ে গিয়েছেন তিনি।
পুরুলিয়ার বরাবাজারের জয়নগরপাড়ার বাসিন্দা অমিত সিংহমোদকের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে বৃহস্পতিবার। ওই ব্লকের মুদির দোকান, মিষ্টির দোকান, মোবাইল ফোন রিচার্জ করার দোকান— সর্বত্র সাঁটানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। তাতে লেখা, ‘নো মাস্ক নো গুডস’। অমিতবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে যে একটু রাগ হয়নি, তা নয়। পরে ভেবে দেখলাম, দোকানদার ঠিক করেছেন। তাড়াহুড়োয় আমিই ‘মাস্ক’ পরে যেতে ভুলে গিয়েছিলাম।’’
করোনার সংক্রণ ঠেকাতে বাইরে বেরনোর সময়ে মুখ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। কিন্তু অনেকেই সে সবের রেয়াত করছেন না। খোদ জেলাশাসক পুরুলিয়া শহরের রাস্তায় নেমে মানুষজনকে সতর্ক করেছেন। বরাবাজারে অবশ্য ছবিটা বেশ অন্য রকমের। স্থানীয় মিষ্টির দোকানদার স্বপন সিংহমোদক বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে পুলিশ ও ব্লক অফিসের কর্মীরা নির্দেশ সাঁটিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। দোকানের কর্মী এবং আমি, দু’জনেই ‘মাস্ক’ ব্যবহার করি। কেউ ‘মাস্ক’ না পরে এলে তাঁকে জিনিস বেচি না।’’
বিডিও (বরাবাজার) সৌভিক ভট্টাচার্য জানান, বাসিন্দারা তাঁদের সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বেশির ভাগ দোকানদারই ‘মাস্ক’ পরার নির্দেশ পালন করছেন। অন্যদেরও পালন করতে বাধ্য করছেন।’’ বরাবাজার থানার আইসি সৌগত ঘোষের কথায়, ‘‘এ ভাবে যে নিজে এবং বাড়ির লোকজন সুরক্ষিত থাকবেন, সেটাই সবাই বুঝতে পারছেন। তাই নির্দেশ সাঁটিয়ে রেখে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলছেন না। সেটা অক্ষরে-অক্ষরে পালনও করছেন।’’
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার এই সচেতনতা গড়ে তোলার ব্যাপারে পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিডিও, জয়েন্ট বিডিও, আইসি এবং বিএমওএইচ— সবার লাগাতার চেষ্টার ফলে বরাবাজারে প্রায় সমস্ত ক্রেতা বিক্রেতা এখন ‘মাস্ক’ ব্যবহার করছেন।’’