রেশন বিলি নিয়ে অভিযোগ ওঠা বন্ধ হচ্ছে না বাঁকুড়ায়। নানা অভিযোগের জেরে শনিবার ইন্দাসের হরিপুরের রেশন ডিলারের দোকান বন্ধ করল জেলা খাদ্য দফতর। এ দিনই বড়জোড়ার শীতলায় উপভোক্তাদের বেশি দামে কেরোসিন বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ডিলারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
এ দিন ইন্দাস ১ পঞ্চায়েতের হরিপুর গ্রামের উপভোক্তাদের একাংশ ডিলারের বিরুদ্ধে রেশন লুকিয়ে রাখা ও দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের কম খাদ্যপণ্য দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। স্থানীয় রেশন উপভোক্তা বুল্টি মাজির অভিযোগ, শনিবার সকালে খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা দোকান পরিদর্শন করে যাওয়ার পরেই, ডিলার জিনিসপত্র সরিয়ে দিচ্ছিলেন। উত্তেজিত জনতা রেশন দোকানের মালিককে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ইন্দাস থানার পুলিশ ও খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। তদন্তের পরে দোকান ‘সিল’ করে দেন তাঁরা। বিডিও (ইন্দাস) মানসী ভদ্র চক্রবর্তী বলন, “রেশন অন্যায় ভাবে মজুত করে রাখা ও ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে। খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা উপভোক্তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন। ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পশ্চিমবঙ্গ এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক গুরুপদ ধক জানান, লিটার পিছু কেরোসিনের দাম আগে ছিল ৪০ টাকা ৬২ পয়সা। এখন কমে হয়েছে ২৯ টাকা ৭৫ পয়সা। বড়জোড়ার শীতলায় এক ডিলার পুরনো দরেই কেরোসিন বিক্রি করছিলেন বলে এ দিন অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছড়াতেই বাড়তি টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল বলে কিছু গ্রাহক দাবি করেছেন। সেই খবর চাউর হতেই শুরু হয় বিক্ষোভ।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ডিলারকে নিয়ে যায়। উপভোক্তাদের একাংশ বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জমা করেন। সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির তরফেও বিডিওর কাছে চিঠি দিয়ে ঘটনার তদন্ত দাবি করা হয়েছে। এ দিন চেষ্টা করেও ওই ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক গুরুপদবাবু বলেন, “শীতলার ওই ডিলারের কাছে পুরনো দরে তোলা কেরোসিন মজুদ ছিল। তাই আগের দরেই গ্রাহকদের দিচ্ছিলেন। ক্ষোভের মুখে পড়ে ভয় পেয়েই তিনি টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন বলে শুনেছি।”
জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, যে সব ডিলারেরা পুরনো দরে কেনা কেরোসিন এখনও বিলি করতে পারেননি, তাঁরা আগের দরেই তা বিক্রি করবেন। বাঁকুড়ার খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় বলেন, “বড়জোড়ার ঘটনায় ওই ডিলার পুরনো দরে কেনা কেরোসিন বিলি করছিলেন কি না তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ক্ষেত্রে কোথাও বেনিয়ম ধরা পড়লে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”