যমুনাবাঁধ ভরাট করে প্রকল্পের বাড়ি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
যমুনাবাঁধ, কালিন্দীবাঁধ, আবার যমুনাবাঁধ। প্রশাসনের তৎপরতা সত্ত্বেও বিষ্ণুপুরের একের পর এক জলাশয় মাটি দিয়ে ভরাট করার অভিযোগ উঠছে। এ বার তদন্তে গিয়ে বাঁধ ভরাট করে আবাস প্রকল্পের বাড়ি তৈরির অভিযোগও পেলেন ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু কী ভাবে জলাশয় ভরাট করা জায়গায় বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দিল বিষ্ণুপুর পুরসভা— এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যমুনাবাঁধের জলাভূমিতে মাটি ফেলে ভরাট করার অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার তদন্তে যায় ভূমি দফতর। সেখানেই তাঁরা প্রাথমিক ভাবে দেখেন কিছু ভরাট করা জায়গায় আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরি হয়েছে।
বিষ্ণুপুরের ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক পার্থসারথি মাজি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে দেখা গিয়েছে, যমুনা বাঁধের জলাভূমিতে আবাস প্রকল্পের কয়েকটি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। অনেক আগে তৈরি হলেও, কী ভাবে তা হয়েছে, খতিয়ে দেখা হবে।’’ তিনি জানান, বাঁধে যাঁরা মাটি ফেলছেন বলে অভিযোগ, খোঁজ করে তাঁদের পাওয়া যায়নি। যাতে ভরাট না করা হয়, সে জন্য সেখানে নোটিস টাঙানো হবে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আবাস প্রকল্পের বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়ার আগে জমির নথি পরীক্ষা করে দেখা হয়। তারপরে বাড়ি তৈরির কাজ ধাপে ধাপে দেখা হয়। তাহলে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ওই জলাভূমিতে কী করে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি হল? বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামীর দাবি, “আগে কী হয়েছে আমি জানি না। তবে ইদানীং আইন মেনে জমির কাগজপত্র যাচাই করেই বাড়ি তৈরির অনুমোদনদেওয়া হচ্ছে।”
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জলাশয়ের ধারেই একাধিক সীমানা সূচক স্তম্ভ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, রাতবিরেতে সেই সব নির্দিষ্ট জায়গায় মাটি ফেলে বোজানো হচ্ছে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, জমি দালালেরা ভরাট করে বিক্রি করে দিচ্ছে বাঁধের জায়গা। ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিক পার্থসারথি মাজি বলেন, “অভিযোগ পেয়েই ভূমি দফতরের কর্মীদের পাঠানো হয়। তাঁদের রিপোর্ট পেলেই আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’’