সারা ব্লকে মেয়েদের জন্য মোটে একটি মাত্র স্কুল। তাই ফি বছর স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় নাজেহাল অবস্থা মানবাজার গার্লস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের।
সেই ১৯৬০ সালে নারী শিক্ষার সম্প্রসারণের উদ্দেশে মানবাজার ১ ব্লকের মধ্যে এই গার্লস হাইস্কুল গড়ে উঠেছিল। তারপর থেকে এই ব্লকে জনসংখ্যা বাড়ার অনুপাতে কয়েকটি হাইস্কুল গড়ে উঠলেও গার্লস স্কুলের সংখ্যা সেই একটিতেই থেমে রয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বর্তমানে এই ব্লকে প্রায় ২০০টি প্রাথমিক ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। মধ্য শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে ৯টি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা ১৭টি।
মানবাজার ব্লক সদরে স্বপন-সুব্রত হাইস্কুল ও প্রমোদ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল স্কুলে কো-এডুকেশন চালু রয়েছে। রাধামাধব বিদ্যায়তনে শুধুমাত্র একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে কো-এডুকেশন রয়েছে। কিন্তু তা সত্বেও অভিভাবকদের অনেকেই মেয়েদের মানবাজার গার্লস স্কুলেই ভর্তি করতে চান। একবার ভর্তি করতে পারলে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত তাঁরা নিশ্চিন্ত। তা ছাড়া এই স্কুলে আদিবাসী মেয়েদের জন্য একটি হস্টেল রয়েছে। সেখানে ১৪২ জনের জায়গা রয়েছে। এই স্কুলে কস্তুরবা হস্টেলও চালু রয়েছে। সেখানে ১০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েরা এখানে বিনামূল্যে খেয়ে থেকে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। তাই গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের এখানে ভর্তি করার চাপও রয়েছে।
স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০১০ সালে এই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮০০। এখন সেই সংখ্যা প্রায় ১৭০০। ২০১৬ সালে পঞ্চম শ্রেণিতেই ২৫০ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে।’’ স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ফি বছর স্কুলে ভর্তির চাপ বাড়লেও সেই অনুপাতে পরিকাঠামো এবং শিক্ষিকার সংখ্যা বাড়েনি। মনোজবাবু বলেন, ‘‘২৬ জন শিক্ষিকা ও ছ’জন পার্শ্বশিক্ষিকা থাকলেও নানা কারণে মাঝেমধ্যেই ৩-৪ জন করে ছুটিতে থাকেন।’’ স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা শোভা সেনাপতি বলেন, ‘‘শিক্ষিকা চেয়ে কয়েকবার শিক্ষা দফতরে আবেদন জানিয়েছি। কোনও লাভ হয়নি।’’ ক্লাসঘর থেকে বাথরুমের অভাবও রয়েছে। নেই সাইকেল স্ট্যান্ডও। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ব্লকের একমাত্র মেয়েদের স্কুল হওয়ায় অভিভাবকদের অনুরোধ ফেরানো যায় না। চাপ থাকলেও ভর্তি নিতেই হয়। এই স্কুলেরই প্রাক্তনী তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর মন্তব্য, ‘‘ব্লক এলাকায় মেয়েদের স্কুলের প্রস্তাব এলে আমি শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলব।’’ কিন্তু তিনি নিজে কেন উদ্যোগী হননি? এ প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি মন্ত্রীর কাছে।