অযত্নের ছাপ সর্বত্র। ছবি: সুশীল মাহালি
কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে মুকুটমণিপুর থেকে কম-বেশি পাঁচ কিলোমিটার দূরে গোড়াবাড়ি পঞ্চায়েতের লোয়াডিতে তৈরি হয়েছিল বিলাসবহুল একটি সরকারি লজ। তিন বছর কেটে গেলেও চালু হয়নি সেটি। কেন চালু হয়নি, তা নিয়ে প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মুর আশ্বাস, ‘‘লজটি চালু করা হবে। সেটি চালানোর জন্য দরপত্র ডাকা হবে। সে প্রক্রিয়া শেষ হলেই চালু হবে লজটি।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, বছর পাঁচেক আগে, মুকুটমণিপুরে এসে এলাকার পর্যটন বিকাশে জোর দিতে বলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই, লোয়াডির মনোরম পরিবেশে লজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আর্থিক সহায়তায় জেলা পরিষদ লজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কাজের জন্য কম-বেশি চার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুকুটমণিপুর লজ ও হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের একাংশ জানান, পর্যটন মরসুমে অনেকেই মুকুটমণিপুরে এসে থাকার জায়গা পান না। খাতড়া বা বাঁকুড়ায় গিয়ে থাকতে হয় তাঁদের। লজটি চালু হলে প্রচুর পর্যটক সেখানে থাকতে পারবেন। লজ নির্মাণকারী সংস্থার এক কর্মী জানান, ওই লজে মোট পাঁচটি দোতলা বাড়ি রয়েছে। প্রতিটিতে রয়েছে চারটি করে মোট ২০টি ঘর। প্রায় ৮০ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে লজে।
এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ‘‘চালু না হওয়ায় লজ নষ্ট হতে বসেছে। ইতিমধ্যেই অনেক জানলা ও দরজা ভেঙে গিয়েছে। ঝোপজঙ্গলে ভরে গিয়েছে পুরো এলাকা। ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়দের একাংশ। তাঁদের দাবি, কেন লজটি চালু করা যায়নি, সে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।
ওই এলাকার বাসিন্দা জলেশ্বর মান্ডি, গোষ্ঠ সর্দার, আদিত্য সর্দার বলেন, ‘‘লজটি চালু হলে এলাকার কিছু বেকার যুবক কাজ পাবেন। পর্যটকেরা আসা শুরু করলে এলাকার অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।’’
মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্যদের চেয়ারপার্সন তথা রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে সামনের পর্যটন মরসুমের আগেই লজটি চালুর চেষ্টা হবে।’’