পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল বাঁকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল বাঁকুড়ায়। সোনামুখীতে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়াতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করলেন সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি। অভিযোগ, এক বিজেপি কর্মীর মাথাও ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধেও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। জয়পুরেও দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন করাতে না পেরে বাঘাজোলের কাছে রাস্তায় বসে পড়েন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। কলকাতা যাওয়ার পথে ওই বাঘাজোলেই অবরোধের মুখে পড়েন তৃণমূলের নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পাইলট কার ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। পরে ঘুরপথে সেখান থেকে অন্য রুটে কলকাতার পথে রওনা দেন সায়ন্তিকা।
মনোনয়নের প্রথম দিন থেকেই অশান্তি শুরু হয় বাঁকুড়ায়। মনোনয়নের তৃতীয় দিনেও সেই ধারা অব্যাহত থাকল। সোমবার সকালে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে সোনামুখী বিডিও অফিসে মনোনয়ন করাতে যান দিবাকর। অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনে বিধায়ক-সহ বিজেপি প্রার্থীদের উপর হামলা চালায় লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা তৃণমূল। বিজেপি প্রার্থীদের ব্যাপক মারধর করার পাশাপাশি বিধায়ককেও হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। দিবাকর বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পুলিশের প্রত্যক্ষ সমর্থনে জমায়েত করে থাকা তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের উপর অতর্কিতে এই আক্রমণ চালায়। আমাদের বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন।’’ পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনেছে তৃনমূল। তৃনমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বিজেপি ও সিপিএম মিলিত ভাবে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমাদের সাত জন আহত হয়েছে।’’
মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে জয়পুরে। বিরোধীদের মনোনয়ন করতে দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে জয়পুরের বাঘাজোল মোড়ে পথ অবরোধ করে বসে পড়েন সৌমিত্র ও কোতুলপুরের বিধায়ক হরকালী প্রতিহার। বাঁকুড়া থেকে আরামবাগ হয়ে কলকাতায় ফেরার পথে এই অবরোধের মুখে পড়েন তৃণমূলের সায়ন্তিকা। সায়ন্তিকার গাড়ির সামনে থাকা পুলিশের পাইলট কার ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। তাতে পুলিশের গাড়ির কাচও ভেঙে যায়। পরে সায়ন্তিকা গাড়ি ঘুরিয়ে সোনামুখী দিয়ে অন্য রুটে কলকাতার উদ্যেশ্যে রওনা দেন। তৃণমূলের নেত্রী বলেন, ‘‘জয়পুরে অবরোধের কোনও খবর আমার কাছে ছিল না। আমাকে জরুরি প্রয়োজনে আজ কলকাতায় ফিরতে হচ্ছে। তাই আমি আরামবাগ হয়ে ফিরছিলাম। বাঘাজোল মোড়ে সৌমিত্র খাঁর নেতৃত্বে আমার গাড়ির সামনে থাকা পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায় বিজেপি। গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়।’’
পাল্টা সৌমিত্র বলেন, ‘‘সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ আর গুন্ডাদের নিয়ে জয়পুরে দাদাগিরি করতে এসেছিল। সায়ন্তিকা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেই তাঁর গাড়ি আমরা ভাঙচুর করিনি। কিন্তু তাঁর এই দাদাগিরি আমরা মেনে নিচ্ছি না।’’