পথে বেরিয়ে নাজেহাল। ছবি: সঙ্গীত নাগ
চৈত্রের শেষে, গত শনিবার ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছুঁয়েছিল জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। রবিবার আরও এক ধাপ চড়ে তা পৌঁছল ৪১ ডিগ্রিতে। মরসুমের শুরুতে গরমের দাপটে নাজেহাল জেলাবাসী। ক্ষণিক স্বস্তি পেতে কালবৈশাখীর দিকে চেয়ে সকলে।
হাতোয়াড়ায় কৃষি দফতরের কৃষিবীজ খামার দফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, গত তিন দিনে ক্রমে বাড়ছে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। শুক্রবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার তা ৪০.২ ডিগ্রিতে পৌঁছনোর পরে, এ দিন ৪১ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। গত বছরে এ সময়ে বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও এ বারে তা নেই আপাতত।
এ দিন বেলা বাড়তেই দেখা গিয়েছে গরম হাওয়ার দাপট। রাস্তায় লোকজন কম। যে ক’জন বেরিয়েছেন, মুখ-মাথা কাপড়ে ঢাকা। ছুটির দিন হওয়ায় বাস-অটো-টোটোয় যাত্রী
ছিল কম। বেলা ১২টা বাজতে না বাজতেই জেলার শহরাঞ্চলগুলিতে দোকান বন্ধ করে বাড়ির পথ ধরতে দেখা গিয়েছে ব্যবসায়ীদের। তাঁদের একাংশের দাবি, ১১টার পরে থেকেই বেচাকেনা কমতে শুরু করেছে। তবে বিক্রি বেড়েছে ডাবের জল, ফলের রস থেকে শরবত-লস্যির।
গরম বাড়ার সঙ্গে শরীর ঠিক রাখতে জরুরি কিছু পরামর্শ মেনে চলার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষত বয়স্ক ও শিশুদের চড়া রোদে বাড়ির বাইরে না বেরোনোর কথা বলছেন তাঁরা। পুরুলিয়া মেডিক্যালের চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় জানান, যাঁরা বাইরে বা মাঠে কাজ করেন, ‘হিট স্ট্রোক’ এড়াতে টানা কাজের ফাঁকে ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া দরকার। বাইরে থেকে ফিরে তৎক্ষণাৎ জল না খেয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে প্রয়োজনে নুন-চিনি মেশানো জল খাওয়া যেতে পারে। সঙ্গে বারেবারে স্নান করা, হালকা সুতির জামাকাপড় পরা ও ঠান্ডা পানীয়ের বদলে আখের রস, ছাতুর শরবত, লস্যি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
গরম বৃদ্ধির সঙ্গে চিন্তা বেড়েছে জল নিয়েও। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া তবে বলেন, ”জেলার কোথাও জলসঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে, এ মর্মে কোনও খবর এখনই নেই। তবে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। যেখানে যেখানে অতীতে জল-সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেখানে প্রয়োজনে জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হবে। এ ছাড়া, জেলার শতাধিক গ্রামে সৌরবিদ্যুতের পাম্প বসানো হচ্ছে।”