দেওয়ালের সামনে কৌতূহলী মানুষের জটলা। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি করলে কড়া ‘শাস্তির’ হুমকি দেওয়া পোস্টার ঘিরে রহস্য ঘনিয়েছে বিষ্ণুপুরে। শনিবার সকালে শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাটানধার এলাকায় বন্ধ সিনেমা হলে দেওয়ালে হাতে লেখা ওই পোস্টার দেখতে পাওয়া যায়। তাতে তিন বিজেপি কর্মীর নাম উল্লেখ করে ‘বিজেপি করলে মাথা কেটে নেব’ বলে হুমকি দেওয়া ছিল। পোস্টারের নীচে তৃণমূলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই পোস্টার যারা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবিতে পুলিশের কাছে এ দিন অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে।
শুক্রবার বর্ধমান শহরের রথতলায় ‘বিজেপি করলে লাশ ফেলে দেব’ লেখা পোস্টার বাড়ি বাড়ি সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে এলাকাবাসী পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের করেন। বিষ্ণুপুরেও কে বা কারা পোস্টার দিয়েছে, তা নিয়ে শহরে চর্চা শুরু হয়েছে।
লোকসভা ভোটে বিজেপি বিষ্ণুপুর কেন্দ্র জেতার পরে অনেকেই নিজেদের বিজেপি কর্মী বলে দাবি করতে শুরু করেছেন। তৃণমূল থেকে আসা সৌমিত্র খাঁ বিজেপির সাংসদ হওয়ায় তাঁর অনুগামীদের ভিড় আগে থেকেই দলে বেড়েছে। সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তাঁর অনুগামীরাও নিজেদের বিজেপি কর্মী বলে দাবি করছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ কিছু দিন আগে বলেছিলেন, ‘‘অনেকেই গেরুয়া পতাকা নিয়ে ঘুরছেন, যাঁদের আমরা চিনি না।’’ এই পরিস্থিতিতে বিজেপির তিন কর্মীর নামে হুমকি পোস্টার পড়ায় নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
এ দিন স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এত দিন বিজেপি করছি, কিন্তু কোনওদিন এ ধরনের পোস্টার পড়েনি এই শহরে। নেপথ্যে কারা, তাদের খুঁজে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছি। অভিযোগও করা হয়েছে।’’ শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর তথা বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা কমিটির সদস্য দেবব্রত বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘বিষ্ণুপুরে তৃণমূল শেষ হয়ে গিয়েছে। হাতে গোনা কয়েক জন এখন তৃণমূল করছেন। এলাকাকে অশান্ত করতে এ কাজ তাঁরাই করেছেন।’’
বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায় অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, ‘‘তৃণমূলের কর্মীরা এ ধরনের কাজ করে না। ব্যক্তিগত হিংসাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি থেকেই কেউ কেউ করছে এ সব। পুলিশ তদন্ত করে নিশ্চয় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’ তবে তৃণমূলের কয়েকজন কাউন্সিলরের কটাক্ষ, ‘‘বিষ্ণুপুরে বিজেপির পুরনো নেতা-কর্মীরা নতুনদের ভিড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। পোস্টার-কাণ্ডে ওদের দলের সেই অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে কি না, তাও দেখা দরকার।’’