বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতাল
তাঁকে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগের সেকশন অফিসার অর্ক দাস। সেই মামলায় বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে রায় দেয় হাইকোর্ট। অবিলম্বে অর্কবাবুকে কাজে যোগ দিতে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই ঘটনার সূত্রেই বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে দীর্ঘদিন কর্মরত এক চিকিৎসককে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরাল বিশ্বভারতী।
সূত্রের খবর, গত বছর নভেম্বরের শেষে তাঁর মায়ের মৃত্যুর পরে অর্কবাবু নিজের চিকিৎসার জন্য পিয়ার্সন হাসপাতালে যান। সেখানের চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি চেন্নাই যান চিকিৎসার জন্য। ঠিক কী কী কারণে ওই চিকিৎসক অর্কবাবুকে স্থানীয় দুর্গাপুর বা কলকাতার কোনও হাসপাতালে রেফার না করে শুধুমাত্র চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালেই রেফার করলেন— কারণ দর্শানোর নোটিসে (যার প্রতিলিপি আনন্দবাজারের হাতে আছে) সেই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে। এ ছাড়াও অর্কবাবুর শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য কেন সেই রেফারের চিঠিতে দেওয়া হয়নি, বিশ্বভারতীর কর্মসচিবের সই করা শো-কজ নোটিসে জানতে চাওয়া হয়েছে সেই বিষয়েও।
হাইকোর্টে অর্কবাবুর আইনজীবী জানান, চেন্নাই থেকে ফিরে আসার পরে তাঁর মক্কেল কাজে যোগ দিতে চাইলে কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানান, চেন্নাই হাসপাতালের চিকিৎসকের ‘সার্টিফিকেট’-কে পিয়ার্সন হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বীকৃতি না দিলে তাঁর ‘মেডিক্যাল লিভ’ মঞ্জুর হবে না। অর্কবাবু চেন্নাই থেকে সার্টিফিকেট আনান। তাতে লেখা ছিল, ২৭ ডিসেম্বর থেকে তিনি কাজে যোগ দিতে পারবেন। পিয়ার্সনের চিকিসককে পাঠানো শো-কজে এ-ও জানতে চাওয়া হয়েছে, ওই চিকিৎসক কী ভাবে মন্তব্য করেছেন যে, চেন্নাই হাসপাতালের ফিটনেস সার্টিফিকেটকে তাঁর স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি নয়?
শো-কজ ঘিরে গুঞ্জন পড়েছে বিশ্বভারতীর কর্মচারী মহলে। অনেকে বলছেন পিয়ার্সনের ওই চিকিৎসক ভাল মনে করেছেন বলেই চেন্নাইয়ে রেফার করেছেন। এর জন্য তাঁকে কেন কারণ দর্শাতে হবে?
পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, অর্কবাবু অতীতেও চেন্নাইয়ের ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সে কারণেই এখানকার চিকিৎসক তাঁকে চেন্নাইয়ে রেফার করেন। চেন্নাইয়ের হাসপাতাল অর্কবাবুর অসুস্থতা ভাল করে জানে বলেই রেফার-চিঠিতে পিয়ার্সনের চিকিৎসক আলাদা করে বিশদ বিবরণ দেননি। বিশ্বভারতীর কর্মিসভার এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পিয়ার্সনের ওই চিকিৎসক বহুদিন ধরে বিশ্বভারতীতে এবং বোলপুর শহরে চিকিৎসা করছেন। কোনও রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অন্য যে কারও থেকে তিনিই বেশি বুঝবেন। তাই চিকিৎসক হিসেবে যা কর্তব্য তাই করেছেন।’’
শো-কজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রতিক্রিয়া মেলেনি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের কাছ থেকেও।