বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
পরিবেশ বিধি মেনে কঠিন ও তরল বর্জ্যের নিষ্কাশনের করা হয় না। এমনই অভিযোগ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পাঁচ বছর আগে আদালত ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছিল। সেটিও পালন না করা হয়নি। তাই আবার মামলা রুজু করা হয়। এই মামলায় পরিবেশ আদালত রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। সেই নিরীক্ষণ রিপোর্ট আদালতে জমা পড়ে। পরিবেশ আদালত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে উক্ত-নিরীক্ষণ রিপোর্টের উপর তাঁদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিল এ বার। যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
২০১৬ সালে শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায় দূষণ নিয়ে পরিবেশ আদালতে মামলা করেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে পরিবেশ বান্ধব মেলা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় পরিবেশ আদালতের তরফে। ২০১৭ সালে সেই সমস্ত বিধি নিষেধ মেনে পৌষমেলা করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যার ফলে সে বার কোনও মামলা হয়নি। কিন্তু ২০১৮ সালে পৌষমেলার দূষণ নিয়ে ফের সরব হন সুভাষ দত্ত। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘প্রতি বছর পৌষমেলার দূষণই শুধু নয়, বিশ্বভারতীর এলাকায় যে সমস্ত মানুষজন বসবাস করেন, বিশ্বভারতীতে ৬,৫০০ বেশি পড়ুয়া, পাঁচশোরও বেশি অধ্যাপক এবং হাজারের বেশি কর্মী থাকা সত্ত্বেও কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের যথাযথ কোনও ব্যবস্থা নেই বলে। এর ফলে পরিবেশের মারাত্মক ভাবে দূষণ হচ্ছে।’’
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। ২০২০ সালে জাতীয় পরিবেশ আদালত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, আইন মোতাবেক কঠিন ও তরল বর্জ্য পদার্থের ব্যবস্থাপনা করতে হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় ফের অভিযোগ জানিয়ে পুনরায় এই বিষয়ে একটি মামলা রুজু করেন সুভাষ দত্ত। তিনি জানান, পরিবেশ আদালতে গত পাঁচ ডিসেম্বর মামলাটি ওঠে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে উক্ত নিরীক্ষণ রিপোর্টের উপরে তাঁদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দেয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ৩ জানুয়ারি। সুভাষ দত্ত বলেন, “যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, সেখানে এই পরিবেশগত অনাচার কী ভাবে চলছে, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।” যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।