ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এজেন্সির কাছে নিরাপত্তাকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, বিশ্বভারতীর দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীদের একাংশের মধ্যে কর্তব্যে গাফিলতির প্রমাণ রয়েছে তাঁদের কাছে। একাধিক জনের ক্ষেত্রে এজেন্সির কাছে ইতিমধ্যেই প্রমাণ-সহ অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এজেন্সিও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
বেতন না-হওয়া এবং তাঁদের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বিশ্বভারতী নিয়োজিত জনা তিরিশেক বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী গত ১১ জুলাই দেখা করেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল এবং বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে। সেই ঘটনার পরেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিরাপত্তা এজেন্সির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিশ্বভারতীর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, সেখানেই এজেন্সির কাছে বেশ কয়েক জন নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার প্রমাণ ছবি-সহ তুলে দেওয়া হয়। বেশ কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাতে ডিউটির সময় রক্ষীরা ঘুমোচ্ছেন। বিশ্বভারতীর দাবি, যাঁরা নৈশপ্রহরার দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের অনেকেই কাজের জায়গায় চাদর, বালিশ এমনকি টেবিল ফ্যান নিয়েও আসেন।
প্রসঙ্গত, গত দু’মাসের মধ্যে বিশ্বভারতীতে চারটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ নিরাপত্তায় গাফিলতির। রসায়ন বিভাগে পাইপ ও কল চুরি, চিনাভবনে কল চুরি, শিল্পসদনে জানালার গ্রিল ভাঙার চেষ্টা এবং পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে এয়ার কন্ডিশনের বাইরের দিকে থাকা তামার তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক বলেন, “এখনও পর্যন্ত বড় কোনও চুরির ঘটনা না ঘটলেও নিরাপত্তাকর্মী থাকাকালীন চুরি হওয়া মানে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকেই প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেওয়া। যদি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত নাই করা যায়, তা হলে এই বিরাট সংখ্যার নিরাপত্তারক্ষী রাখা শুধুই অর্থের অপচয়।”
সাংসদ ও জেলা সভাপতির কাছে আনা নিরাপত্তাকর্মীদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সির সাইট ম্যানেজার কবির মোল্লা। তিনি বলেন, “বেতন নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল, কিন্তু গত সোমবারেই সকলকে জুনের বেতন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর ব্যাগ তল্লাশির কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে জমা পড়েনি।’’ এমনকি একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তও তাঁদের অন্ধকারে রেখে নেওয়া হয়েছে বলেই তাঁর দাবি।
যদিও একাধিক নিরাপত্তাকর্মীর দাবি, “আমরা কোনও মিথ্যা অভিযোগ করিনি। এজেন্সি বা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কারও কাছেই আমাদের অভিযোগ জানানোর জায়গা নেই, তাই বাধ্য হয়েই প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে আমরা তৃণমূল কার্যালয়ে যাই। কয়েক জনের ভুলের সাজা সকলে পেতে শুরু করলে কোথাও তো প্রতিবাদ করতে হবে।”