গাঁজা-মদের দোকানে না, এককাট্টা গ্রামবাসী

গ্রামের নাম কনকপুর। মুরারই-১ ব্লকের ডুমুড় পঞ্চায়েতের এই গ্রাম ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া। এই গ্রামের বহু বাসিন্দা চাষবাসের কারণে ঝাড়খণ্ডে যান। ঝাড়খণ্ডের মানুষজনও প্রয়োজনে এই গ্রামে দু-বেলা আসেন।

Advertisement

তন্ময় দত্ত

মুরারই শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৭
Share:

প্রতিবাদ: প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল মুরারই ১ ব্লকের ডুমুড় পঞ্চায়েতের কনকপুরে। নিজস্ব চিত্র

গ্রামের মানুষ এককাট্টা, এ গ্রামে মদ আর গাঁজার কেনাবেচা চলবে না। আবগারি দফতর যাতে গ্রামে মজের দোকানের লাইসেন্স না দেয় তার দাবিতে রবিবার কচিকাঁচা থেকে গ্রামের মহিলা বা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা পথে নামলেন। প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করলেন।

Advertisement

গ্রামের নাম কনকপুর। মুরারই-১ ব্লকের ডুমুড় পঞ্চায়েতের এই গ্রাম ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া। এই গ্রামের বহু বাসিন্দা চাষবাসের কারণে ঝাড়খণ্ডে যান। ঝাড়খণ্ডের মানুষজনও প্রয়োজনে এই গ্রামে দু-বেলা আসেন। মুরারইয়ের এই গ্রামে উপ পীঠ অপরাজিতা মন্দিরে গত ৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চুরি হয়। সেই দিনই ঝাড়খণ্ডের একটি গ্রামের মন্দিরেও চুরি হয়। একই দিনে দুই এলাকায় দুটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত কনকপুরবাসীরা। গেটের দুটি তালা ভেঙ্গে চুরি করেন দুষ্কৃতীরা। নাট মন্দিরে ঢুকে দুষ্কৃতীরা প্রতিমার সমস্ত গয়না নিয়ে যায়।

তার কিছুদিন আগেই কনকপুরবাসী এক জন প্রাক্তন শিক্ষক বিকেলবেলা হাঁটতে বেরিয়ে ঝাড়খণ্ডের বিরকিটি গ্রাম পর্যন্ত। ফেরার সময় বেঙ্গল-ঝাড়খণ্ড
সীমানার কাছে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকে আংটি ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। এই ঘটনাগুলোয় গ্রামবাসীদের একাংশ বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, এ গ্রামে মদের দোকান খোলা হলে অপরাধের মাত্রা আরও বাড়বে। এমনিতেই অন্য রাজ্যের সীমানা লাগোয়া গ্রাম হওয়ায়
অপরাধমূলক কাজের পর গা ঢাকা দেওয়া সহজ হওয়ায় কোনও ভাবেই মদ ও গাঁজার বিক্রি করতে দেওয়া যাবে না।

Advertisement

ডুমুড় পঞ্চায়েতের দুই সদস্যও এই গ্রামে মদের দোকান খোলার লাইসেন্স যেন না দেওয়া হয় তা লিখিত
ভাবে আবগারি দফতরে জানিয়েছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, পঞ্চায়েত ভিত্তিক মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়ার কথা। কিন্তু পঞ্চায়েতের দুই সদস্যের চিঠি আর গ্রামবাসীদের আপত্তিতে চিন্তায় পড়েছেন আবগারি দফতরের কর্তারাও। এ দিন বিকেলে গ্রামবাসীরা কনকপুর সারদুয়ারীতে মিছিল করেন। নেশা জাতীয় সমস্ত দ্রব্য বর্জনের জন্য সকলকে সচেতন করেন।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কনকপুর গ্রামে মদের দোকানের লাইসেন্সের জন্য আবগারি দফতরে আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন গ্রামের কোনও একজন। সেই খবর জানাজানি হতেই প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্প্রতি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বসিরহাট, গাইঘাটা বা জয়নগরেও একই ভাবে গ্রামবাসীরা মদের দোকানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। কনকপুরের বাসিন্দা হেমন্ত রবিদাস বলেন, ‘‘গ্রামে কোনও মদের দোকান করতে দেব না। আমরা গ্রামে মিছিল করেছি। এতেও যদি মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়া হয় তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’

রামপুরহাটের আবগারি বিভাগের কর্তা সুহৃদ রায় বলেন, ‘‘কনকপুর গ্রাম থেকে মদের দোকানের জন্য লাইসেন্সের জন্য আবেদন জমা পড়েছিল। দফতর থেকে এলাকায় গিয়ে পরিদর্শন করে আসা হয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগও পেয়েছি। জনস্বার্থে আমরা লাইসেন্সের বিষয়টি আপাতত স্থগিত রেখেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement