Jhalda Municipality

সুরেশ-সুদীপ জুটি ফিরল, দূরে কংগ্রেস

ঘটনা হল, ২০২২ সালে ১৩ অক্টোবর পুরপ্রধান সুরেশের বিরুদ্ধে যখন কংগ্রেস-নির্দল জোট অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন, তখনও উপপুরপ্রধান ছিলেন সুদীপই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৭
Share:

উপপুরপ্রধান পদে সুদীপ কর্মকারকে শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল। ছবি: দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

উপপুরপ্রধান হিসাবে শপথ নিলেন ঝালদার বিক্ষুব্ধ তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি সুদীপ কর্মকার। বুধবার ঝালদা পুরভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল।

ঘটনা হল, ২০২২ সালে ১৩ অক্টোবর পুরপ্রধান সুরেশের বিরুদ্ধে যখন কংগ্রেস-নির্দল জোট অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন, তখনও উপপুরপ্রধান ছিলেন সুদীপই। তাই ফের সুরেশ-সুদীপ জুটি পুরসভায় ফিরলেন। মাঝের কয়েকটা বছর ডামাডোলের মধ্যে পুরসভার উন্নয়নের কাজ কিছুটা ব্যাহত হয় বলে দাবি পুরবাসীদের একাংশের। এ বার কি শহরের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলির দিকে পুরসভা নজর দেবে— প্রশ্ন তাঁদের।

Advertisement

শপথ নিয়ে উপপুরপ্রধান সুদীপ বলেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে এলাকার উন্নয়নই হবে এই পুরবোর্ডের প্রধান লক্ষ্য। আগে উপপুরপ্রধান হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তা কাজে লাগবে।’’

তবে সুরেশপন্থীদের এই প্রত্যাবর্তনে কংগ্রেসের বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই উপপুরপ্রধান পদ কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধি পান কি না, সে দিকে নজর ছিল অনেকের। এ দিন তাঁদের একাংশ দাবি করেন, কংগ্রেস সযত্নে পদের বিষয়ে দূরে থেকে বিতর্ক এড়াল। যদিও কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস কোনও পদের প্রত্যাশী নয়। আমরা ঝালদা শহরের সার্বিক উন্নয়ন চাই। পদটা বড় কথা নয়।’’ তিনি জানান, যাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে বেইমানি করেছেন, তাঁদের উচিত শিক্ষা দিতেই দলকে এই সিদ্ধান্তে আসতে হয়েছে।

শীলা পুরপ্রধান পদে থেকে তৃণমূলে যাওয়ার পরেই উপপুরপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেন কংগ্রেসের পূর্ণিমা কান্দু। তারপর থেকে ঝালদার উপপুরপ্রধানের পদটি খালি পড়েছিল। এতে বিভিন্ন কাজে আসা লোকজনও সমস্যায় পড়ছিলেন।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে ঝালদার প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার থেকে শুরু করে প্রাক্তন দুই উপপুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠক ও মহেন্দ্রকুমার রুংটা, ঝালদা শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি দেবাশিস সেন-সহ আরও অনেকেই ছিলেন।

এলাকার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, অতীতে ঝালদা পুরসভার ক্ষমতা দখলকে ঘিরে সুরেশ বনাম প্রদীপের দড়ি টানাটানির অধ্যায় এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে। সুরেশের কাছে এসেছেন প্রদীপ। যাঁদের সঙ্গে সুরেশের বিশেষ বনিবনা ছিল না, তাঁদেরও অনেককে এখন পাশে পেয়েছেন সুরেশ।

তবে বিবাদের কথা সুরেশ কিংবা প্রদীপ কেউই মানতে চাননি। সুরেশ দাবি করেন, ‘‘ঝালদার সামগ্রিক উন্নয়নের প্রশ্নে কোথাও কোনও বিভেদ নেই।’’

এক ধাপ এগিয়ে প্রদীপের দাবি, ‘‘এতদিন পরে ঝালদায় ‘আসল’ তৃণমূলের পুরবোর্ড গঠিত হল।’’ নকল কারা? প্রদীপ দাবি করেন, অপসারিত তৃণমূল পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর সঙ্গে যে চার কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি গত বছর সেপ্টেম্বরে দলের বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোর হাত ধরে ঘাসফুল শিবিরে এসেছিলেন, তাঁরা ‘নকল’ তৃণমূল। যদিও শীলার দাবি, ‘‘আমাদের দলে আসল-নকল বলে কিছু নেই। এগুলো হাস্যকর কথাবার্তা। যাঁরা দলের নির্দেশ না মেনে গাজোয়ারি মনোভাব দেখাচ্ছেন, দল নিশ্চয় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’

পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘দলের প্রতীকে জয়ী হলেও যাঁরা বর্তমানে ঝালদা পুরসভার ক্ষমতায়, তাঁরা দলবিরোধী কাজ করেছেন। দল তাঁদের শো-কজ় করলেও জবাব পর্যন্ত তাঁরা দেননি। সব কিছুই রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। যেমন নির্দেশ আসবে, সে মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement