বন্ধের প্রভাব। সিউড়ির বেসরকারি বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বাস। নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছিল এসইউসিআই। সেই বন্ধের কিছুটা প্রভাব পড়ল জেলায়। বিশেষ করে সরকার ও প্রশাসনের তরফে আবেদন থাকা সত্ত্বেও এ দিন বেসরকারি বাস চলেছে হাতে গোনা। বন্ধ ছিল সামান্য কিছু দোকান পাঠও। এসইউসি নেতৃত্বের দাবি, সরকারি অফিস খোলা থাকলেও এ দিন কাজ সে-ভাবে হয়নি। কার্যত বন্ধ ছিল আদালতও।
এসইউসি-র জেলা সম্পাদক মদন ঘটক বলেন, ‘‘আরজিকরে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে মহিলারা যখন রাস্তায় নেমেছেন, তখন ওই হাসপাতালে যে-ভাবে দুষ্কৃতী-তাণ্ডব হয়েছে, তার প্রতিবাদেই বন্ধ ডাকা হয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, যে ‘নারকীয়’ ঘটনা আরজি করে ঘটেছে, তার প্রতিবাদে বন্ধে মানুষের স্বতঃফূর্ত সমর্থন পাওয়া গিয়েছে।
বন্ধের যে প্রভাব পড়েছে, তা মানছেন জেলার বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের নেতারা। বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাস চালাতে হবে না, এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু, অধিকাংশ বাসের চালক ও খালাসি আসেননি। তাই হাতে গোনা কিছু বাস চলেছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘হতে পারে সংবেদনশীল ওই ঘটনার প্রতিবাদে বা রাস্তায় সমস্যায় পড়তে হবে, এই ভয়ে ওঁরা আসেননি। যদিও প্রশাসন আমাদের অনুরোধ করেছিল বাস চালাতে।’’
বাস মালিক সমিতির বোলপুর শাখার সহ-সম্পাদক সুনীল ঘোষের আবার স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘আরজি করের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে যে প্রতিবাদ চলছে, তাকে আমরাও সমর্থন করেছি। এ দিন ১২ ঘণ্টার বন্ধ থাকায় সেটিকে সমর্থন করে বাস চালাইনি।’’ প্রায় একই সুর আর একটি বাসমালিক সংগঠনের সম্পাদক আবদুল আজিমেরও। তাঁর কথায়, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা।’’ তবে, এ দিন রামপুরহাট মহকুমায় কিছু বেসরকারি বাস চলেছে বলে জানা গিয়েছে। অন্য দিকে সরকারি বাস চললেও যাত্রী কম ছিল তাতে।
জেলাব্যাপী বন্ধ সফল করতে ঝাঁপিয়েছিল এসইউসি, এমনটা অবশ্য নয়। রামপুরহাট, সিউড়ি, বোলপুর ,নলহাটি, মুরারই প্রবঋতি এলাকায় দলের কর্মীরা বন্ধ সফল করতে নানা কর্মসূচি নিয়েছিলেন। পথে নেমে মানুষের কাছে আবেদনও করেছেন। পুলিশ অবশ্য বন্ধ সমর্থকদের জায়গায় জায়গায় সরিয়ে দিয়েছেন।
এ দিন সকালে রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ড মিনিট ১৫ রাস্তা অবরোধ করেন এসইউসির নেতা কর্মীরা। তবে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। একই ভাবে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে বন্ধের সমর্থনে একটি মিছিল হয়। সরকারি বাসস্ট্যান্ডের সামনে বিক্ষোভও দেখান দলের কর্মীরা। সেখানেও পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে জেলা প্রশাসন ভবনের সামনে বন্ধ সফল করার আর্জি নিয়ে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন এসইউসি-র নেতা-কর্মীরা। এ দিন সকালে মুরারই বন্ধের সমর্থনে মিছিল হয়।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কয়েকটি বেসরকারি বাস চলেনি। এ ছাড়া, এ দিন বন্ধের কোনও প্রভাব পড়েনি। রাজ্য সরকার আরজি করের ঘটনা প্রথম থেকে নিন্দা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে দোষীর ফাঁসি চেয়েছেন।’’