Vegetable Farmers

Vegetable Farmers: আনাজ ফলিয়ে দাম অমিল, দাবি চাষিদের

বিষ্ণুপুর মহকুমার একটি বড় অংশের আনাজ চাষ হয় মড়ার পঞ্চায়েতের মড়ার, চুঁয়াশোল, হাতগাড়া, বারিশোল, আমডহরা ইত্যাদি গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর, পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ০৭:০৫
Share:

আনাজের জোগান এ বার বেশি বলে দাবি। বিষ্ণুপুরের মড়ারে। নিজস্ব চিত্র।

গত মাসখানেকে আনাজের দাম অস্বাভাবিক ভাবে কমেছে, দাবি চাষিদের। তাতে মাথায় হাত বাঁকুড়ার অনেক আনাজ চাষির। কারও কারও দাবি, দাম কম মেলায় খেত থেকে ফসল তোলাই বন্ধ করেছেন। কেউ আবার জানাচ্ছেন, আনাজ আড়তে না পাঠিয়ে, গবাদি পশুকে খাইয়ে দিচ্ছেন। কৃষি বিপণন দফতরের মতে, আনাজের ভাল জোগান থাকার কারণেই দাম কমে গিয়েছে।

Advertisement

বিষ্ণুপুর মহকুমার একটি বড় অংশের আনাজ চাষ হয় মড়ার পঞ্চায়েতের মড়ার, চুঁয়াশোল, হাতগাড়া, বারিশোল, আমডহরা ইত্যাদি গ্রামে। এই গ্রামগুলির অধিকাংশ চাষিই আনাজ চাষ করেন। কিন্তু কুঁদরি, পটল, ঝিঙের মতো নানা ফসলের দামের পতন তাঁদের চিন্তায় ফেলেছে বলে চাষিরা জানাচ্ছেন। মড়ার গ্রামের আনাজ চাষি শওকত খান, জামালউদ্দিন মণ্ডলদের কথায়, ‘‘অল্প সময়ে, কম খরচে দ্বিগুণ লাভ দেয় কুঁদরি। এ বছর বৈশাখ মাসে দাম পেলেও, জৈষ্ঠ পড়তেই দাম তলানিতে ঠেকেছে। বৈশাখে দাম ছিল কেজি প্রতি বারো টাকা। এখন কেজি প্রতি দু’টাকা। ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। জল, সার সবের দাম বাকি। ঋণ শোধ করব কী করে, বুঝতে পারছি না!’’ পাত্রসায়রের আনাজ চাষি তপন ঘোষেরও দাবি, ‘‘কুঁদরি চাষে বিঘা প্রতি তিরিশ হাজার টাকা খরচ করলে, সত্তর হাজার টাকা লাভ হয়। আট মাস ফলন মেলে। তবে এ বছর যা দাম, তাতে চাষের খরচই উঠবে না।’’

চাষিদের দাবি, একই অবস্থা ঝিঙে, পটল, বরবটির মতো নানা আনাজের দামেরও। পাত্রসায়রের চাষি বাদল সরকারের কথায়, ‘‘কিছু দিন আগেও যে ঝিঙে বারো টাকা প্রতি কেজি বিক্রি করেছি, তা এখন দেড় টাকা! আড়তে যাওয়া বন্ধ করে গবাদি পশুকে খাওয়াচ্ছি।’’ সোনামুখীর বেলোয়া গ্রামের সুভাষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ঝিঙে চাষ করতে এক বিঘায় তেরো-সাড়ে তেরো হাজার টাকা খরচ। যা দাম পাচ্ছি, তাতে আনাজ দামোদরেরজলে ফেলে দেওয়া ছাড়া গতি দেখছি না!’’ চাষিদের দাবি, এই আনাজ চাষ থেকেই বর্ষার ধান চাষের খরচজোগাড় করেন তাঁরা। কিন্তু এ বছর আনাজের দাম অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় কোনও লাভ থাকবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

কৃষকদের একাংশ দামের এমন পতনের জন্য আড়তদারদের দিকে আঙুল তুলেছেন। কিন্তু পাত্রসায়র, সোনামুখী, বিষ্ণুপুরের অনেক আড়তদারের পাল্টা দাবি, চাহিদার তুলনায় আনাজের জোগান এ বার অনেক বেশি। দল বেঁধে একই রকম আনাজ সবাই চাষ করাও অতিরিক্ত জোগানের অন্যতম কারণ বলে তাঁদের একাংশ মনে করছেন। আবার মড়ার গ্রামের আড়তদার আসলাম খানের কথায়, ‘‘জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভিন্‌ রাজ্য থেকে আনাজ নিতে আসা গাড়ির সংখ্যা খুব কমে গিয়েছে। রফতানি কমে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে দাম কমছে।’’

বাঁকুড়ার কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক আকবর আলি বলেন, ‘‘শুধু বাঁকুড়া নয়, গোটা রাজ্যে একই চিত্র। অনুকূল আবহাওয়ার জন্য ফলন বেশি হয়েছে। চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি। তবে কালবৈশাখী শুরু হয়েছে। আবার দাম বৃদ্ধির একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement