এ বারও অনিশ্চিত শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা। —ফাইল চিত্র।
এ বার পৌষমেলা করতে দিতেই হবে। শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা পূর্বপল্লির মাঠেই করার দাবিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাল ‘শান্তিনিকেতন পৌষমেলা বাঁচাও কমিটি’। প্ল্যাকার্ড, পোস্টার, ব্যানার নিয়ে বিশ্বভারতীর বলাকা গেটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি, বিশ্বভারতী পৌষমেলা না করলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন।
২০১৯ সালে শেষ বার শান্তিনিকেতন পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর করোনা আবহে মেলার অনুমোদন দেননি বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যদিও বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের তরফে বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে আয়োজিত হয় পৌষমেলার। কিন্তু এ বার শান্তিনিকেতনে পূর্বপল্লির মেলার মাঠেই পৌষমেলা করার দাবি জানালেন ব্যবসায়ীরা।
আগে নির্ধারিত সময়ে মেলার স্টল তোলা নিয়ে বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদে জড়ান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এর পর মামলা গড়ায় আদালতে। পাশাপাশি, পৌষমেলায় দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে আদালতের নির্দেশে টানাপড়েন শুরু হয়। মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে শান্তিনিকেতনে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। এই অভিজ্ঞতার কারণে এ বারও পৌষমেলা করবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এমনটাই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর।
অন্য দিকে, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ইতিমধ্যে পৌষমেলা করার জন্য চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতীকে। ট্রাস্টের দাবি, এখনও পর্যন্ত কোনও সদুত্তর মেলেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। পৌষ মেলা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণের জলের প্রয়োজন হয়। এই জল সংকট মেটানোর জন্য ব্যবহার করা হয় ভুবনডাঙার পৌষ মেলার মাঠের লাগোয়া বাঁধগুলিকে। কিন্তু ঘটনাচক্রে সংস্কারের অভাবে সেই বাঁধগুলো কচুরিপানায় ভরে গিয়েছে। তাই ট্রাস্টের তরফে বোলপুর পুরসভাকে চিঠি দিয়ে সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, এর প্রতিক্রিয়ায় বোলপুর পুরসভা থেকে জানানো হয়, আগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে মেলার আয়োজনে অনুরোধ জানানো হবে। তার পর তারা অন্য বিষয়ে পদক্ষেপ করবে। তবে সব মিলিয়ে চলতি বছরেও ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে।