জলের অপেক্ষায় দীর্ঘ লাইন। ছবিটি তুলেছেন অনির্বাণ সেন।
সাকুল্যে দু’বালতি জল। তাই দিয়েই চলছে গোটা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র!
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। একজন মহিলা কর্মী হাসপাতালের ব্যবহারের জন্য দু’বালতি জল পাশের স্কুল থেকে নিয়ে আসেন। আর ওই জলেই হাসপাতালের রোগী থেকে নার্স, চিকিৎসকরা হাত ধোওয়ার জন্য জল মেপে ব্যবহার করেন। আর নার্স, চিকিৎসক, হাসপাতাল কর্মীরা তাদের খাওয়ার জন্য জল বোতলে নিয়ে আসেন। এই ভাবেই টানা তিন বছর ধরে চলছে রামপুরহাট ১ ব্লকের অধীন উদয়পুর গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং তার সঙ্গে থাকা উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে ভরসা স্থানীয় উদয়পুর, দেখুড়িয়া, কামাক্ষা, কাঁদা এই সমস্ত গ্রাম। সপ্তাহে সোম, বুধ, শুক্র এখানে চিকিৎসক আসেন। সে ক’দিন গড়ে ৮০ জনের বেশি রোগী পরিষেবা পান। তাঁদের জন্যে জলের কোনও ব্যবস্থাই নেই!
কেন এই অবস্থা?
চিকিৎসক নিপুন বালা জানান, এখানে সাব মার্সিবল পাম্প সেটের মাধ্যমে পানীয় জলের পরিষেবা ব্যবস্থা চালু ছিল। মাঝে সাবমার্সিবল পাম্পে বিদ্যুত সংযোগের গণ্ডগোল হয়। পরে সাবমার্সিবল পাম্পসেটের যন্ত্রাংশ চুরি যায়। তারপর থেকে আর জলের সংযোগ করা হয়নি। বর্তমানে ওই কর্মী দু’বালতি জল নিয়ে আসেন। তাতেই কোনওরকমে কাজ চলছে। হাসপাতালের নার্স সোনালী মজুমদার যোগ করছেন, ‘‘হাসপাতালের বাথরুমও পরিস্কার নেই। ক’দিন আগে তো একটা কেউটে সাপ দেখা দিয়েছিল। তিন মহিলা কর্মী হাসপাতালে রয়েছেন। তাঁদের জন্য বাথরুমে জলের ব্যবস্থা না থাকলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালে ডিউটি করা খুব মুশকিল।’’
এমন সমস্যার কথা জানা নেই বলে দাবি রামপুরহাট ১ ব্লকের ভারপ্রাপ্ত বিডিও অতনু মণ্ডলের। তবে তাঁর আশ্বাস, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে।’’
সংশ্লিষ্ট বড়শাল পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রাবণী সাহা জানান, উদয়পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য একটি নলকূপের প্রকল্প পঞ্চায়েত সদস্যকে দেওয়া হয়েছিল। ওই পঞ্চায়েত সদস্য ওখানে নলকূপ না বসিয়ে অন্যত্র বসিয়েছেন। বর্তমান আর্থিক বছরে আবার একটি নলকূপ এবং নতুন করে সাবমার্সিবল বসানোর জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এমন সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? সদুত্তর দেননি তিনি।