Indian railways

হাতেগোনা যাত্রী নিয়ে ট্রেন ছুটল প্রথম দিন

রেলের দাবি, ট্রেন শুরুর বিষয়টি এখনও অনেকে জানেন না বলেই প্রথম দিনে যাত্রী কিছুটা কম হয়েছে। তবে অন্য মতও উঠে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১০
Share:

অবশেষে: বাঁকুড়া স্টেশনে ঢুকছে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস। সোমবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

প্রায় আট মাস পরে, ট্রেন এসে দাঁড়াল স্টেশনে। তবে যাত্রী হল বেশ কম।

Advertisement

সোমবার একটি এক্সপ্রেস, একটি লোকাল ও কিছু মেল/ এক্সপ্রেস চলা শুরু করেছে আদ্রা ডিভিশনে। লোকাল ছাড়া, অন্য কোনও ট্রেনেই অসংরক্ষিত কামরা রাখা হয়নি। করোনার প্রকোপ শুরুর আগে, নিত্যযাত্রীদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ট্রেন ছিল খড়্গপুর-আসানসোল প্যাসেঞ্জার। ঠাসা ভিড় হত। ওই ট্রেন এখন চলছে খড়্গপুর-আসানসোল মেল/ এক্সপ্রেস হিসাবে। সোমবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ আদ্রায় পৌঁছয় ট্রেনটি। ওঠার জন্য তখন স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন কুড়ি-পঁচিশ জন। দুপুরে আদ্রা-আসানসোল লোকালেও একই ছবি। রেল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আদ্রা থেকে আসানসোল যাওয়ার জন্য জনা পঞ্চাশ যাত্রী টিকিট কেটেছেন।

রেলের দাবি, ট্রেন শুরুর বিষয়টি এখনও অনেকে জানেন না বলেই প্রথম দিনে যাত্রী কিছুটা কম হয়েছে। তবে অন্য মতও উঠে এসেছে। খড়গপুর-আসানসোল বা পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলিতে মোট সওয়ারির অর্ধেকেরও বেশি নিত্যযাত্রী। এ দিন মেল/ এক্সপ্রেস ও এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিতে ‘মান্থলি’ টিকিট গ্রাহ্য না করায় তাঁদের অনেকই উঠতে পারেননি। আসানসোল যাতায়াতের মাত্র দু’টি ট্রেন চালু হওয়ায় ফেরার অসুবিধার কথা ভেবেও অনেকে ট্রেন ওঠেননি বলে জানিয়েছেন। আদ্রার বাসিন্দা নিত্যযাত্রী মহম্মদ মুর্তজা বলেন, ‘‘প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে প্রচুর লোক আদ্রা থেকে আসানসোল যাতায়াত করেন। রেল এই শাখায় লোকাল ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়ালেই যাত্রী অনেক বাড়বে।’’

Advertisement

অন্য দিকে, প্যাসেঞ্জারের বদলে যে সমস্ত ট্রেন মেল/ এক্সপ্রেস হিসাবে চালানো হচ্ছে, সেগুলির ভাড়া এক লাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। খড়্গপুর-আসানসোল প্যাসেঞ্জার ট্রেনে আদ্রা থেকে আসানসোল যেতে খরচ হত ১০ টাকা। মেল/ এক্সপ্রেস হওয়ায় ভাড়া লাগছে ৩০ টাকা। ওই ট্রেনে আদ্রা থেকে খড়্গপুর যাওয়ার টিকিটের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫ টাকা। বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ তথা লোকসভায় রেলের স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়ার দাবি, ‘‘কয়েকগুণ ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষজনের পক্ষে বেশি দাম দিয়ে টিকিট কেটে ট্রেন চাপা সম্ভব হয়নি।”

এ দিন সকালে আদ্রা স্টেশনে গিয়ে দেখা গিয়েছে, স্নিফার ডগ নিয়ে হাজির আরপিএফের জওয়ানেরা। রয়েছেন ছ’-সাত জন টিকিট পরীক্ষক। ফুট ওভারব্রিজের কাছে ‘থার্মাল স্ক্যানার’ দিয়ে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পৌনে ১০টায় ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছয় খড়গপুর-আসানসোল মেল/ এক্সপ্রেস। প্রায় সমস্ত কামরা ফাঁকা ছিল। জনা পঁচিশ যাত্রী আদ্রায় নামেন। একই ছবি ছিল বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর স্টেশনেও। বেলা আড়ইটে নাগাদ জয়চণ্ডী স্টেশনে গিয়ে দেখা গিয়েছে, আদ্রা-আসানসোল লোকাল ধরার জন্য অপেক্ষা করছেন সাকুল্যে দশ জন। তবে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস বিষ্ণুপুরে পৌঁছনোর পরে, বেশ কিছু যাত্রী ট্রেনে উঠেছেন। কামরা মোটের উপরে ভর্তি ছিল।

লোকাল ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে। আদ্রা স্টেশনে সোমবার। নিজস্ব চিত্র

খড়গপুর-আসানসোল মেল/ এক্সপ্রেসে বিষ্ণুপুর থেকে বাঁকুড়ায় এসেছেন সূর্যশেখর চক্রবর্তী ও গণেশ পাঠক। তাঁরা বলেন, ‘‘এতদিন মোটরবাইকে বাঁকুড়ায় আসতে হচ্ছিল। ট্রেন শুরু হওয়াতে সুবিধাই হয়েছে। কিন্তু ট্রেন এতটাই ফাঁকা থাকবে, ভাবিনি।” আদ্রায় টিকিট কাউন্টারে টিকিট কাটার পরে ,স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম দাস বলেন, ‘‘এতদিন পরে ট্রেন শুরু হওয়ায় ভেবেছিলাম টিকিট কাউন্টারে প্রচুর ভিড় হবে। তাই কিছুটা সময় হাতে নিয়েই এসেছি। কিন্তু কাউন্টার পুরো ফাঁকা থাকবে ভাবিনি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement