বাঁকুড়ায় বড়জোড়ায় চোখে চশমা পরে মিছিল করলেন শাসক দলের মহিলা কর্মী-সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র।
মহিলাদের নিয়ে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের ‘শূর্পণখা’ মন্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। বাঁকুড়ায় বড়জোড়ায় চোখে চশমা পরে মিছিল করলেন শাসক দলের মহিলা কর্মী-সমর্থকেরা। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতার উদ্দেশে তাঁদের বার্তা, ‘‘বিজয়বর্গীয় দেখে যান, মহিলারা শূর্পণখা নন। আমাদের প্রত্যেকের নাক আছে। সেই নাকে চশমাও পরেছি।’’ মিছিলে পর বিজয়বর্গীয়ের কুশপুতুলও পো়ড়ানো হয়। এই কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
বৃহস্পতিবার ইনদওরে এক অনুষ্ঠানে বিজয়বর্গীয়ের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিজেপি নেতা বলেছেন, খারাপ পোশাকে মহিলাদের শূর্পণখার মতো দেখায়। তাঁর কথায়, ‘‘মহিলারা এমন খারাপ পোশাক পরে বেরোন... মহিলাদের আমরা দেবী মনে করি... কিন্তু তার কোনও চিহ্ন নেই! ওই মহিলাদের শূর্পণখা মনে হয়। ভগবান আপনাদের সুন্দর শরীর দিয়েছে। সুন্দর পোশাক পরুন।’’ রামায়ণে রাবণের বোন শূর্পণখাকে ‘রাক্ষসী’ হিসাবে দেখানো হয়েছে। সেই চরিত্রকেই মহিলাদের পোশাকের প্রেক্ষিতে তুলে ধরায় বিরোধী-সহ বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিজয়বর্গীয়। তারই প্রতিবাদে রবিবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় মহিলা তৃণমূল।
মহিলা তৃণমূলের স্থানীয় নেত্রী অর্চিতা বিদের নেতৃত্বে বড়জোড়ার অডিটোরিয়াম থেকে এই প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় চৌরাস্তা মোড়ে। সেখানেই পোড়ানো হয় বিজেপি নেতার কুশপুতুল। তৃণমূলের এই কর্মসূচিতে যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের চোখেই চশমা ছিল। অর্চিতা বলেন, ‘‘শুক্রবার বিজয়বর্গীয় বলেছিলেন, মহিলাদের দেখে মোটেও দেবী লাগে না। তাঁদের শূর্পণখা মনে হয়। বিজয়বর্গীয় বলতে চেয়েছেন, এ দেশের সকল মহিলাদের নাক কাটা। আমরা চশমা পরে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের নাক রয়েছে। সেই জন্যই আমরা চশমা পরতে পেরেছি।’’ কর্মসূচিতে ব্যবহৃত চশমা সংগ্রহ করে মুরলিধর লেনে বিজেপির সদর দফতরে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন অর্চিতা।
এ নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করে বিজেপির যুব মোর্চার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ কর বলেন, ‘‘দেশের যেখানে যেখানে বিজেপির সরকার রয়েছে, সেখানে মহিলারা সর্বাধিক সুরক্ষিত। অন্য দিকে, এ রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। এখানে হাঁসখালি, বগটুইয়ের মতো ঘটনা ঘটে। তৃণমূলের নেতানেত্রীদের বহুরূপী হয়ে ঘুরে বেড়ানো উচিত নয়। সামনের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ এর জবাব দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।’’