চায়ের দোকানের মালিক গ্রেফতার। প্রতীকী ছবি।
নদিয়ার হাঁসখালিতে তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার এক। শুক্রবার সকালে যে চায়ের দোকানে আমোদ আলি বিশ্বাসকে খুন করা হয়, সেই দোকানের মালিককে গ্রেফতার করল হাঁসখালি থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, চায়ের দোকানের মালিক আব্দুল খালেক মণ্ডলের সামনেই খুনের ঘটনা ঘটেছিল। প্রথমে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে তিনি গ্রেফতার হন। ধৃতকে শনিবার রানাঘাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁর পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁকে জেরা করে খুনের কিনারা হতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, পাঁচ আততায়ী চায়ের দোকানের সামনে বেশ কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের তিন জনের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। পাঁচ অপরিচিতের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের কিছু বলেননি কেন, এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি আব্দুল। শুধু তা-ই নয়, অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শী ও দোকানদারের বয়ানের মধ্যে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে বলেই তাঁকে জেরা করার প্রয়োজন বোধ করছে পুলিশ। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কন্নন বলেন, ‘‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে।’’
হাঁসখালির বড় চুপরিয়া বাজারের কাছে আমোদের বাড়ি। শুক্রবার সকাল ৮টা নাগাদ তিনি আব্দুলের দোকানে চা খাচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই সময় আততায়ীরা খুব কাছ থেকে গুলি করেন তাঁকে। প্রথমে আমোদের হাতে, পেটে গুলি লাগে। প্রাণে বাঁচতে দৌড়ে তিনি পাশের একটি মুদির দোকানে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই তিনি পড়ে যান। আততায়ীরা তাঁর কানের পাশে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে পর পর তিনটি গুলি চালান। তার পর তাঁরা বাইক চালিয়ে চলে যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, আততায়ীদের সকলেরই মুখ ঢাকা ছিল। বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে আমোদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আমোদ তৃণমূলের রামনগর বড় চুপরিয়া ১ অঞ্চল কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি অঞ্চল সভাপতি বদল হলেও নতুন কমিটি গঠন হয়নি। পুলিশের খাতায় তাঁর বিরুদ্ধে খুন, বোমাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি তাঁকে বাড়ি থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতারও করে পুলিশ। ২৭ দিন জেল হেফাজতে থাকার পর দিন পনেরো আগে বাড়িতে ফিরেছিলেন আমোদ। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর সঙ্গে দলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্যের রেষারেষি চলছিল। সেই পঞ্চায়েত সদস্য আমোদের ভয়ে ঘরছাড়া বলেই দাবি। আমোদের স্ত্রী সালমা বিবির দাবি, সেই পঞ্চায়েত সদস্যই খুনের পিছনে রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।